Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারকে চাপ নয়, যুক্তি দিয়ে বোঝান, কূটনীতিকদের ড. কামাল


৬ জানুয়ারি ২০১৯ ১৮:৩৭

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: পুনঃনির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা সম্ভব না হলে, অন্তত যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা যেতে পারে—কূটনীতিকদের এমন পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।

রোববার (৬ জানুয়ারি) হোটেল আমারি-তে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফকালে এ পরামর্শ দেন তিনি। বিকেল ৪টা থেকে পৌনে ৬টা পর্যন্ত কূটনীতিদের ব্র্রিফ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা পুনঃনির্বাচন দাবি করছি। আমার তো মনে হয় তারাও (বিদেশি কূটনীতিক) একই জিনিস চায়। অর্থাৎ এটা নিয়ে কোনো তর্কই হয়নি। কারণ, আমরা যেটা বলেছি, তারাও সেটা দেখেছে।’

‘সব রাষ্ট্র আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। আমরা বলেছি, তোমরা (কূটনীতিক) চেয়েছ বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল, বাংলাদেশের মানুষ সুন্দরভাবে একটা গণতান্ত্রিক সমাজে থাকুক, আইনের শাসনে থাকুন—এটা আমাদেরও আকাঙক্ষা। তোমরা যেটা চাও, আমরা সেটা-ই চাই। এ নিয়ে কোনো বিতর্ক তো নেই’— বলেন ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘জনমত যাচাই করলে মানুষ একটি জিনিস-ই চায় যে, সমাজে শান্তি থাকুক, শৃঙ্খলা থাকুক, তারা কাজকর্ম করে বেঁচে থাকুক। নির্বাচন ভালমতো হলে সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যেত। এখন আমাদের কথা হলো—ঠিক আছে, যা হবার হয়েছে। এখন একটা সুন্দর নির্বাচন দিয়ে মানুষকে সুন্দর সমাজ গঠন করা সুযোগ দেওয়া হোক।’

কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস পাওয়া গেছে কি? পুনঃনির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের ব্যাপারে আপনারা কিছু বলেছেন?—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা আবেদন রেখেছি। তারা ‘না’ করেনি। সবাই গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে পারে।’

‘আমরা বলেছি, চাপ না হোক, তোমরা (কূটনীতিক) যুক্তি দিয়ে বোঝাতে পারো যে, তোমরা (কূটনীতিক) সবাই বাংলাদেশের পক্ষে, মানুষের পক্ষে, এমনকি সরকারের পক্ষে— কারোরই বিপক্ষে না। সরকারকে বোঝাবে যে, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ফলাফল সবাই মেনে নেবে। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে—বলেন ড. কামাল হোসেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর কূটনীতিকদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। এই বৈঠকে নির্বাচন সম্পর্কে নিজেদের মূল্যায়ন, অভিজ্ঞতাএবং অভিযোগ তুলে ধরেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।

ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের সার্বিক বিষয় তাদের সামনে তুলে ধরেছি। কিছু লিখিত ডকুমেন্ট দিয়েছি, মুখেও ব্রিফ করেছি। তারাও আমাদের সঙ্গে একমত যে, নির্বাচনটা ফেয়ার হয়নি। আমরা তাদেরকে বলেছি, আমরা চাই গণতন্ত্র চর্চার পথ সুগম থাক। তারা এ ব্যাপারে আমাদেরকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।’

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত, সুইডেনের রাস্ট্রদূত, স্পেনের রাষ্ট্রদূত, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত, পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার, কানাডা, জার্মানি, তুরস্ক ও মকক্কোর উপরাষ্ট্রদূত, রাশিয়া, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার পলিটিক্যাল ডেস্কের ফার্স্ট সেক্রেটারি এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধি।

এছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. মঈন খান, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মাহমুদুর রহমান মান্না, আসাদুজ্জামান রিপন, তাবিথ আউয়াল, আফরোজা আব্বাস ও গোলাম মওলা রনি।

সারাবাংলা/এজেড/এমআই

ঐক্যফ্রন্ট কামাল হোসেন কূটনীতিক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর