মন্ত্রিসভা নিয়ে কিছুই বলবে না বিএনপি
৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০৫
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরীষ্ঠতার পর টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এরইমধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে। সোমবার (৭ জানুয়ারি) শপথ নেবেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
প্রাথম ধাপে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য হচ্ছে ৪৭ জন। এর মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন ২৫ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৯ জন এবং উপমন্ত্রী হচ্ছেন তিন জন। মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া সদস্যরা শপথ নেওয়ার জন্য এরইমধ্যে বঙ্গভবনে ডাক পেয়েছেন।
ডাক পাওয়াদের মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী হলেন- ওবায়দুল কাদের (সড়ক পরিবহন ও সেতু), আসাদুজ্জামান খান কামাল (স্বরাষ্ট্র), এ কে আবদুল মোমেন (পররাষ্ট্র), আনিসুল হক (আইন), আ হ ম মুস্তফা কামাল (অর্থ), এম এ মান্নান (পরিকল্পনা), ডা. দীপু মনি (শিক্ষা), আ ক ম মোজাম্মেল হক (মুক্তিযুদ্ধ), আব্দুর রাজ্জাক (কৃষি), হাছান মাহমুদ (তথ্য), তাজুল ইসলাম (স্থানীয় সরকার), নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন (শিল্প), গোলাম দস্তগীর গাজী (বস্ত্র ও পাট), জাহিদ মালেক (স্বাস্থ্য), সাধন চন্দ্র মজুমদার (খাদ্য), টিপু মুনশি (বাণিজ্য), নুরুজ্জামান আহমেদ (সমাজকল্যাণ), শ ম রেজাউল করিম (গণপূর্ত), মো. শাহাব উদ্দিন (পরিবেশ ও বন), বীর বাহাদুর ঊশৈ সিং (পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক), সাইফুজ্জামান চৌধুরী (ভূমি), নুরুল ইসলাম সুজন (রেলপথ), ইয়াফেস ওসমান (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি), মোস্তাফা জব্বার (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি)।
প্রতিমন্ত্রী হলেন- নসরুল হামিদ (বিদ্যুৎ ও জ্বালানি), শাহরিয়ার আলম (পররাষ্ট্র), জুনায়েদ আহমেদ পলক (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি), কামাল আহমেদ মজুমদার (শিল্প), ইমরান আহমেদ (প্রবাসীকল্যাণ), জাহিদ আহসান রাসেল (যুব ও ক্রীড়া), আশরাফ আলী খান খসরু (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (নৌ পরিবহন), জাকির হোসেন (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা), ফরহাদ হোসেন (জনপ্রশাসন), স্বপন ভট্টাচার্য (স্থানীয় সরকার), মন্নুজান সুফিয়ান (শ্রম), জাহিদ ফারুক (পানিসম্পদ), মো. মুরাদ হাসান (স্বাস্থ্য), শরীফ আহমেদ (সমাজকল্যাণ), কে এম খালিদ (সংস্কৃতি), এনামুর রহমান (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ), মাহবুব আলী (বিমান) ও শেখ মো. আবদুল্লাহ (ধর্ম)।
উপমন্ত্রী হলেন- মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (শিক্ষা), হাবিবুন নাহার (পরিবেশ), এ কে এম এনামুল হক শামীম (পানিসম্পদ)।
কিন্তু নতুন এই মন্ত্রিসভা নিয়ে কোনো মন্তব্য, মতামত বা সমালোচনা করতে রাজি নন রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপির শীর্ষ নেতারা। নির্বাচনে ভরাডুবির পর আত্মবিশ্লেষণ এবং রুটিন ওয়ার্কের বাইরে কিছুই করছেন না।
নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া সদস্যদের নাম ঘোষণার পর রোববার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় ১৫ জন নেতার কাছে মন্তব্য জানতে চাইলে তারা কোনো কিছু বলতে রাজি হননি।
বিএনপির স্থায়ী সদস্য সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘মন্ত্রিসভা নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না।’
দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে কথা বলবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি (ফখরুল) দলের মুখপাত্র। এসব বিষয়ে কথা বলার দায়িত্ব তার। তার সঙ্গে কথা বলুন।’
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দুইটি নম্বরে ফোন দিলে একটা বন্ধ পাওয়া যায়। অন্য নম্বরটি খোলা থাকলেও রিসিভ করেননি তিনি। এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খানের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ফোন খোলা থাকলেও তারা রিসিভ করেননি।
দলীয় সূত্রমতে, নির্বাচনে ভরাডুবির পর আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রত্যাখান করায় নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায় না বিএনপি। তারা মনে করছেন, মন্ত্রিসভা নিয়ে মন্তব্য করার অর্থই হচ্ছে মন্ত্রিসভাকে স্বীকৃতি দেওয়া।
এ কারণেই রোববার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল আমারি-তে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের চোখ এড়িয়ে বিকল্প পথে বেরিয়ে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণমাধ্যম কর্মীরা ফোনে মন্তব্য নিতে চাইলেও কারো ফোন রিসিভ করছেন না তিনি।
সারাবাংলা/এজেড/আরএসও