Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তামাক নিয়ন্ত্রণে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আহ্বান


৭ জানুয়ারি ২০১৯ ২২:৩৩

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, কোম্পানিগুলো বিগত দিনে স্বীকার করেছে নানাভাবে তারা সরকারের নীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছে। তাই জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে হলে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট সোমবার (৭ জানুয়ারি) তাদের রায়েরবাজার কার্যালয়ের কৈবর্ত সভাকক্ষে “তামাক নিয়ন্ত্রণের বর্তমান অবস্থা ও করণীয়” শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) এবং পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক পরিচালক নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ূবুর রহমান, ঢাকা জেলার সাবেক সিভিল সার্জন মুশফিকুর রহমান, দি ইউনিয়ন-এর কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সিনিয়র অফিসার তাইফুর রহমান এবং ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী।

সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা শারমিন আক্তার।

গাউস পিয়ারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও এটি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আমাদের সবার। খুচরা সিগারেট ক্রয়-বিক্রয়ের ফলে সরকার রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী দেওয়ার উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে। তামাকজাত দ্রব্যের কার্টনগুলোতে আইন অনুসারে কোনো ধরনের ছবিসহ স্বাস্থ্য সর্তকবাণী প্রদান করা হচ্ছে না। সিগারেট ছাড়াও কার্টনগুলোতে বিভিন্ন ধরনের পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তামাক কোম্পানিগুলো শুধু জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্যই হুমকি নয়- তাদের কার্যক্রম আমাদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণের অঙ্গীকারকেও চ্যালেঞ্জ করছে মন্তব্য করে অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, তামাক কোম্পানিগুলোর দাবি অনুসারে কর বৃদ্ধির উদার নীতি বা নমনীয়নীতি গ্রহণ করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। কর বৃদ্ধির পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ মেয়াদী কৌশলগত পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন।

মুশফিকুর রহমান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সরকার জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করেছেন। সারাদেশে এই আইনটির বাস্তবায়ন জোরদার করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পাইনগুলোর বিরুদ্ধে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে।

তাইফুর রহমান বলেন, এক সময় আমরা বৈদেশিক সহায়তার মুখাপেক্ষী ছিলাম। তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সারচার্জ আরোপের ফলে সেই অবস্থা থেকে উত্তোরণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অগ্রসর করতে সারচার্জে ও অর্থ ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিতে হবে এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

নজরুল ইসলাম বলেন, কোম্পানিগুলো কৃষকদের বিভ্রান্ত তথ্য দিয়ে তামাক চাষে প্রলুব্ধ করছে। তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারিভাবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা কর্মসূচি নিতে হবে।

আইয়ূবুর রহমান বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো যখন রাজস্বের যুক্তি দিয়ে কর বৃদ্ধির বিরোধিতা করছে, ঠিক তখন বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে (হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়বেটিস) ৬৭ শতাংশ মানুষ মারা যাচ্ছে। ভয়াবহ এসব রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম হচ্ছে। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।

মতবিনিময় সভায় একলাব, এইড ফাউন্ডেশন, বাঁচতে শিখ নারী, ইপসা, সুপ্র, কারিতাস, সিএফএ, আইডব্লিউবি, হিমু পরিবহন, বাংলাদেশ গালস গাইড অ্যাসোসিয়েশন, প্রত্যাশা, নাটাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/জেএ/এটি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর