লিপস্টিক দেওয়ার কথা বলে…
৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:৫৮
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: লিপস্টিক দিয়ে সাজিয়ে দেওয়ার কথা বলে চার বছরের নুশরাত জাহান ও ৫ বছরের ফারিয়া আক্তার দোলাকে নিজেদের ঘরে ডেকে নেয় প্রতিবেশি গোলাম মোস্তফা (২৮) ও তার ভাই আজিজুল বায়ানি (৩০)। পরে ধর্ষণের চেষ্টা করলে দুই শিশু চিৎকার করলে দোলাকে গলা টিপে হত্যা করে। এরপর নুশরাতকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে তাদের মৃতদেহ রাখা হয় ঘরটির খাটের নিচে।
আরও পড়ুন: দুপুরে নিখোঁজ, সন্ধ্যায় ২ শিশুর লাশ উদ্ধার
বুধবার (৯ জানুয়ারি) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মো. ফরিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি দুপুর থেকে দুই শিশু নুশরাত জাহান ও ফারিয়া আক্তার দোলা নিখোঁজ হয়। এলাকায় মাইকিং করা হয়। এরপর সন্ধ্যার দিকে এলাকাবাসীর সহায়তায় শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারের পর মোস্তফা ও আজিজুল জানায়, লিপিস্টিক দিয়ে সাজিয়ে দেওয়ার নাম করে তাদের প্রথমে বাসায় ডেকে আনা হয়। হত্যার পর আজিজুল পালিয়ে যায়। আর মোস্তফা দুই শিশুর মরদেহ নিয়ে বাসায় থাকে। এক পর্যায়ে খাটের নিচে মরদেহ রেখে দেয়।
মোস্তফার স্ত্রী সন্ধ্যার দিকে গার্মেন্ট থেকে বাসায় ফিরলে স্বামীর অস্বাভাবিক আচরণ দেখতে পান। মেঝেতে শিশুদের স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখেন। দুই জনের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশেপাশের লোকজন টের পায় এবং পুলিশকে খবর দেয়। পড়ে মোস্তফাও সন্ধ্যার দিকে পালিয়ে যায়।
মোস্তফা সিরামিকের কারখানায় ও আজিজুল একটি বেকারিতে কাজ করে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, শিশুটি দুটি চিৎকার করলেও এর আওয়াজ উচ্চস্বরে গানের কারণে বাইরে বের হতে পারেনি। নুশরাত ও দোলা নার্সারিতে পড়তো। স্কুল শেষে এলাকায় দুজনে ঘোরাঘুরি করছিল। ঠিক এ সময়ই তাদেরকে সাজিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘরে ডেকে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ডেমরায় শিশু হত্যা: গ্রেফতার ২
আজিজুল আর মোস্তফার পূর্ব-পরিকল্পনা ছিল কিনা জানতে চাইলে ফরিদ উদ্দিন বলেন, এই কাজ করার আগে মোস্তফা মোবাইল ফোনে আজিজুলকে ডেকে নেয়। তার মানে বোঝা যাচ্ছে এখানে পূর্ব কোনো পরিকল্পনা ছিল। তারা একে অপরের মামাত-ফুফাত ভাই।
শিশুদের কেন টার্গেট করা হচ্ছে নাকি অভিভাবকদের অসচেতনতা রয়েছে জানতে চাইলে ডিসি বলেন, এটি বিকৃত মানসিকতা থেকে হচ্ছে। তাছাড়া মাদকাসক্ত এর বড় কারণ।
গতকাল পুলিশ জানিয়েছেল দুই শিশু হত্যাকান্ডের ঘটনায় মুক্তিপণের বিষয়টি জড়িত থাকতে পারে – এ বিষয়ে ডিসি বলেন, মুক্তিপণের বিষয়টি এজন্য মনে হয়েছিল যে, আসামিরা মাদকাসক্ত এবং মাদক ব্যবসা করত। তাদের নামে যাত্রাবাড়ী থানায় ডাকাতি মামলাও আছে। পুলিশের ধারণা ছিল যে, মাদকের টাকার জন্য হয়তো মুক্তিপণ চেয়ে থাকবে। আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি যাতে নিশ্চিত হয় সে ব্যাপারে আমরা তথ্য প্রমাণ ও আলামত দিয়ে সহায়তা করব।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ ও ডেমরা জোনের সিনিয়র সহকারি কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম।
সারাবাংলা/ইউজে/এনএইচ/জেডএফ