।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একমাসের মধ্যে সরকার নির্ধারিত কাঠামোতে বেতন-ভাতা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিলেও তা মানছেন না পোশাক শ্রমিকরা। মালিকপক্ষের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
বুধবার (৯ জানুয়ারি) সকাল থেকেই চতুর্থ দিনের মতো রাস্তায় নেমে এসেছেন তারা। রাজধানীর মিরপুরের কালশী ও উত্তরা এলাকায় তারা বিক্ষোভ করছেন। এ অবস্থায় উত্তরায় যানচলাচল খুব একটা ব্যাহত না হলেও কালশীতে মূল সড়কে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। আশপাশের সড়কে যানবাহন ডাইভারশন করে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আড়াই ঘণ্টাব্যাপী ব্ঠৈক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী, শ্রমিকদের প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা।
বৈঠক শেষে প্রতিনিধিরা জানান, আগামী একমাসের মধ্যে সব পক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয় করে তারা শ্রমিকদের সব দাবি বাস্তবায়ন করবেন। একইসঙ্গে ফেব্রুয়ারিতে জানুয়ারি মাসের বেতনসহ বকেয়া বেতন পরিশোধেরও আশ্বাস দেন তারা।
তবে এ আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন কালশীতে বিক্ষোভরত পোশাক শ্রমিকরা। স্থানীয় স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টের মানিক, জহরুল, জলিলসহ অন্যান্য পোশাক শ্রমিক বলছেন, তারা মালিকের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি চান।
আন্দোলনকারী শ্রমিক জলিল সারাবাংলাকে বলেন, আমরা টিভিতে দেখেছি, সরকার আমাদের দাবি মেনেছে। কিন্তু যিনি বাস্তবায়ন করবেন সেই মালিক এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো আশ্বাস দেননি। তাহলে আমরা কিসের ভিত্তিতে বুঝব যে আমাদের দাবি মালিক মেনে নিয়েছে?
আরেক শ্রমিক জহুরুল সারাবাংলাকে বলেন, গতকাল তারা বলেছেন, আজ থেকে কোনো শ্রমিক রাস্তায় নামলে সে শ্রমিক নয়, সন্ত্রাসী। তার মানে আমাদের দাবি আদায়ে রাস্তায় নামার পথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। নামলে কি তারা সন্ত্রাসী বলে আমাদেরকে হত্যা করবে, যেভাবে গতকাল সাভারে আমাদের এক ভাইকে হত্যা করেছে? আমরা কি তাহলে আমাদের জীবন বাঁচাতে কোনো দাবি করতে পারব না?
তিনি আরও বলেন, কাল (মঙ্গলবার) পুলিশ যে শ্রমিকদের ওপর হামলা করেছে, সেটার বিচারসহ ১৮টি দাবি নিয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। তবে আমরা কোনো ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগ অথবা সন্ত্রাসী কোনো কর্মকাণ্ড গত তিন দিন করিনি, আজও করব না।
কালশী এলাকায় শ্রমিকদের নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির নেতা প্রদীপ রায় সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের দাবি গত নভেম্বরেই মানা হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, ডিসেম্বর থেকে বকেয়া পরিশোধসহ অন্যান্য দাবি মানা হবে। জানুয়ারি মাসের বেতনেই তা প্রমাণিত হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখলাম, সেসব দাবি মানা হয়নি। এখন আবার তারা একমাসের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু এই একমাসেই যে দাবি পূরণ হবে, তার নিশ্চয়তা কী? তাই আমরা মালিকের লিখিত প্রতিশ্রুতি পেলে তবেই রাস্তা থেকে সরব। কিন্তু মালিক পক্ষ এখনও আমাদের দাবি মানার বিষয়ে কিছুই বলেনি।
জানতে চাইলে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা শ্রমিকেদর দাবির বিষয়ে এখন মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। আশা করছি খুব শিগগিরই শ্রমিকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবে।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর