‘নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসে জনজীবন গভীর শঙ্কায় পতিত হয়েছে’
৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:৫৪
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নির্বাচনোত্তর সহিংস সন্ত্রাসের প্রকোপে জনজীবন গভীর শঙ্কায় ও উদ্বেগের মধ্যে পতিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (০৯ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘নির্বাচনোত্তর সহিংস সন্ত্রাসের প্রকোপে জনজীবন গভীর শঙ্কা ও উদ্বেগের মধ্যে পতিত হয়েছে। বিরামহীন সন্ত্রাসের প্রসারে দেশজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অবৈধ শাসনের শৃঙ্খল থেকে মানুষের মুক্তির আশা দুরাশায় পরিণত হয়েছে।
নির্বাচনের পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দেশজুড়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশি হয়রানি ও মামলা-হামলার পর এখন দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।’
‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে আবারো মামলা তারই প্রমাণ’— বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে নতুন মামলার কারণ হলো তারা দলের পক্ষে অটুট অবস্থান নিয়েছেন। নির্বাচনে তারা দুইজনই প্রার্থী ছিলেন। অনেক হামলা হয়েছে তাদের ওপর। এর মধ্যেও তারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন—এটাই তাদের অপরাধ।’
‘তাদের অপরাধ, তারা মুক্ত কণ্ঠে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছেন। তারা যদি নিশ্চুপ থাকতেন, তাহলে তাদের ওপর দুদকের খড়গ নেমে আসত না। আমরা বলতে চাই, দুদক বিরোধীদল নির্যাতনের যাঁতাকল হিসেবে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা লাখ লাখ কোটি টাকা লুট করে নিলেও, সমস্ত ব্যাংক লুট হয়ে গেলেও দুদক চোখ বন্ধ করে বসে আছে। গণমাধ্যমে মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে সাগর চুরির খবর প্রকাশ হলেও, খোদ সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারের মন্ত্রীরা সাগর চুরির কথা বললেও দুদক একেবারে পাথরের মূর্তির মতো চুপচাপ বসে থেকেছে।’
খালেদা জিয়ার জামিন সরকার বার বার বাধাগ্রস্ত করছে অভিযোগ তুলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘যে মিথ্যা মামলায় ইতিপূর্বে অনেককেই জামিন পেয়েছেন, সেই মামলাগুলোতেই আদালতকে ব্যবহার করে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বিলম্বিত করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন,’ কুমিল্লার ‘মিথ্যা’ নাশকতার মামলায় বার বার তারিখ পিছিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আদালতে ন্যায় বিচার পেলে কুমিল্লায় দায়েরকৃত ‘মিথ্যা’ মামলায় বিচারিক আদালতে বেগম খালেদা জিয়া জামিন পেতেন। নিম্ন আদালত জামিনও দিচ্ছেন না। আবার জামিন না মঞ্জুরও করছেন না। ফলে দেশনেত্রীকে উচ্চ আদালতের যাওয়ার পথও রুদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের নির্দেশেই নিম্ন আদালত বেগম জিয়ার জামিন নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে।
‘বিএনপি নিজেদের কারণে নির্বাচনে হেরেছে’— প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জনগণের সাথে নিষ্ঠুর রসিকতা করছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, আহমেদ আজম খান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, রবিউল ইসলাম রবি, আমিনুল ইসলাম, শাহজাহান মিয়া সম্রাটসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এজেড/এনএইচ