ধর্মত্যাগকারী সৌদি তরুণীকে ‘শরণার্থী’ স্বীকৃতি দিল জাতিসংঘ
৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:৫২
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
ধর্মত্যাগ করার কারণে হত্যার শিকার হওয়ার আতঙ্কে পরিবার থেকে পালাতে গিয়ে থাইল্যান্ডে আটকা পড়া সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মেদ আল-কুনুনকে শরণার্থীর স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। সোমবার (০৭ জানুয়ারি) তাকে জোর করে কুয়েতে পাঠানোর চেষ্টা করা থাইল্যান্ড কর্তৃপক্ষ। তখন নিজেকে বিমানবন্দরের এক হোটেলকক্ষে আটকে রেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে ফেরত না পাঠানোর আবেদন জানান তিনি। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। খবর বিবিসির।
অস্ট্রেলিয়া সরকার জানিয়েছে, কুনুনকে বৈধ শরণার্থীর স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ।
পরিবার থেকে পালিয়ে তিনি কুয়েত থেকে থাইল্যান্ড হয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন রাহাফ। রাহাফ জানান, ব্যাংকক বিমানবন্দরে এক সৌদি কূটনীতিক তার সঙ্গে দেখা করে তার পাসপোর্ট জব্দ করায় অস্ট্রেলিয়া যেতে পারেননি তিনি। পরবর্তীতে তাকে জোর করে কুয়েত পাঠানোর চেষ্টা করা হলে তিনি নিজেকে হোটেল কক্ষে আটকে ফেলেন।
রাহাফ পরবর্তীতে জানান, মঙ্গলবার (০৮ জানুয়ারি) তার পাসপোর্টটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, যত শিগগির সম্ভব, অস্ট্রেলিয়ায় কুনুনের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। তার দায়ভার অস্ট্রেলিয়া সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- সৌদি তরুণীর ধর্মত্যাগ, দিন কাটছে মৃত্যু আতঙ্কে
এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা অন্য সব ঘটনার মতই এই ঘটনাটি সামলাবে। এই বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে আর কোনো মন্তব্য করা হবে না।
এ বিষয়ে ইউএনএইচসিআর’র থাইল্যান্ডের কার্যালয়ও কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
তার বাবা ও ভাই তাকে ফিরিয়ে নিতে ব্যাংকক গেছেন। তবে তাদের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন রাহাফ। থাই অভিবাসন কর্মকর্তারা বলেছেন, তার কুয়েতে ফিরে যাওয়া উচিত। সেখানে তার পরিবার তার জন্য অপেক্ষা করছে।
এদিকে, মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়াসহ চার দেশে আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছিলেন রাহাফ। তার আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে এমন ইঙ্গিত দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্রেগ হান্ট বলেন, তিনি যদি শরণার্থী হন তাহলে আমরা তার বিষয়টি খুব, খুব, খুব গুরুতরভাবে বিবেচনা করবো ও তাকে একটি মানবাধিকার ভিসা দেবো।
সৌদি আরবের আইনানুসারে, ইসলাম ধর্মত্যাগ করার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। রাহাফের বাবা সৌদির হাইল প্রদেশের আল-সুলাইমি শহরের গভর্নর। রাহাফের আশঙ্কা, তিনি নিজদেশে ফিরে গেলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমার জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমার পরিবার আমাকে আরও ছোটখাটো বিষয়েও হত্যা করার হুমকি দিয়েছে।
সারাবাংলা/ আরএ