দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর বাণিজ্যমেলা
৯ জানুয়ারি ২০১৯ ২০:০১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: শুরু হয়েছে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০১৯। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের উদ্বোধন শেষে বিকেল পাঁচটায় মূল ফটক দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এসময় মেলায় ঢুকতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শুরুর দিনেই দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর মেলা প্রাঙ্গণ। তবে এখনও সব স্টলের কাজ শেষ হয়নি। শুরু হয়নি বেচাকেনাও।
বুধবার (৯ জানুয়ারি) শেরেবাংলা নগরের বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর দুপুরের পর থেকেই মূল ফটক খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এ বছর বিকেলে মূল ফটক খোলায় অন্য বারের চেয়ে ভিড় বেশি।
এদিকে, মেলার মূল ফটকটি তৈরি করা হয়েছে মেট্রোরেলের আদলে। বিষয়টিকে দর্শনার্থীরা দেখছেন ইতিবাচক হিসেবে। মিরপুর থেকে আসা গৃহিনী সোনিয়া সারাবাংলাকে বলেন, প্রতিবছরই মেলায় আসি। তবে এ বছর প্রথম দিনেই আসতে হয়েছে। ঢাকার বাইরে থেকে ভাই আসায় তার সাথে এসেছি। সুন্দর মূল ফটক দেখে খুব ভালো লেগেছে।
মেলায় আসা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রোকনুজ্জামান হাসনাত বলেন, মেলার প্রথম দিনে আশা করিনি এতো মানুষ হবে। এবার মেলার পরিবেশ খুব ভালো মনে হয়েছে।
মিরপুর থেকে আসা মাসুদ রানা বলেন, ‘মেলার চারপাশ ঘুরেছি। এখনও সব দোকানের কাজ শেষ হয়নি। সাজানো শেষ হয়নি। আর ভেবেছিলাম উদ্বোধনী দিনে বড় কোন অনুষ্ঠান হবে। কিন্তু সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য এমন কোন অনুষ্ঠান হয়নি।’
ঢাকায় ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন বরিশালের জাকির হোসেন। আগামীকালই গ্রামে ফিরে যাবেন। তাই প্রথম দিনেই শিশু সন্তান ও পরিবারকে নিয়ে ছুটে এসেছেন মেলায়। সারাবাংলাকে জাকির বলেন, ‘মেলা শুরু হলো তাই দেখতে এসেছি। কেনাকাটা করারও ইচ্ছা আছে।’
কসমেটিকস দোকানের প্রিতী এন্টারপ্রাইজের বিক্রেতা পারভেজ সারাবাংলাকে বলেন, অন্যবারের চেয়ে এবার মেলার প্রথমদিনে সন্ধ্যায় ভিড় বেশি। কাস্টমার আসতেছে। ক্রেতার সমাগমে ভালোই লাগছে।
মেলায় এবার রয়েছে দুটি ডিজিটাল এক্সিপিরিয়েন্স সেন্টার। এর মাধ্যমে যে স্টলের অবস্থান সহজে জানা যাবে। রয়েছে অনলাইন টিকিটিং ব্যবস্থাও। মেলার পুরো অনলাইন সেবা দেখছে ভ্যালিকন ডিজিটাল। ডিজিটাল এক্সপিরিয়েন্স সেন্টারের অগ্রগতি বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সিইও ইমরান মাহমুদ শামীম সারাবাংলাকে বলেন, কিছু কিছু স্টলের ডাটা এখনও আপ হয়নি। খুব শিগগিরই বাকি ডাটা আপ হবে। দুই একদিনের মধ্যে সব স্টলের অবস্থান জানাতে আমরা আরও উন্নত সেবা দিতে পারবো। অনলাইন টিকিটিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন লাইন টিকিটিংয়ে এখনও তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে তাও দুই একদিনের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।
দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সবই তুলে ধরা হয়েছে মেলায়। গতবারের মতো এবারও আছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এর সামনে সারি সারি নৌকা। ভেতরেও এবার স্থান বেশি। বরাবরের মতোই এবারের মেলাতেও ইপিবি’র তথ্যকেন্দ্র, বিশ্রামস্থল, রক্তদান ও প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রও রয়েছে।
৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া মেলা শেষ হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এবারের মেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৬০৫। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য মেলায় রয়েছে পর্যাপ্ত সবুজ চত্ত্বর। বিশ্রামের জন্য আছে আরামদায়ক ও শোভন বেঞ্চ। মেলা প্রাঙ্গণ হকার ও ভিক্ষুকমুক্ত। শিশুদের বিনোদনের জন্য আছে শিশু পার্ক। রয়েছে মা ও শিশু কেন্দ্র। আর খাদ্য দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণে আছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে পৃথক বুথ।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমএইচ