Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আগামী ৫ বছর আমাদের জন্য কঠিন পরীক্ষা: প্রধানমন্ত্রী


১০ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:৫৯

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছর আমাদের জন্য কঠিন পরীক্ষা। যে উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছি, সেটা অব্যাহত রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ৩টার দিকে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ আমাদের ওপর আস্থা-বিশ্বাস রেখেছে। এই বিশ্বাসের মর্যাদা দিয়ে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলব— এই বিশ্বাস আমাদের আছে।’ তিনি বলেন, ‘আজ জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই। তার আদর্শ বুকে নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাই, এ দেশের যে উন্নতি আমরা করেছি, সেটা যেন অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলীয় সভাপতি বলেন, ‘‘জাতির পিতার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়লে দেখবেন, একজন মানুষ তার জীবনে জনগণের জন্য কতখানি ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন। ‘কারাগারে রোজনামচা’ পড়লেও দেখবেন, কীভাবে তিনি ত্যাগ স্বীকার করেছেন মানুষের জন্য।’ এ সময় ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন নিয়ে ‘সিক্রেটস অব ডক্যুমেন্টস’ বইয়ের প্রকাশিত খণ্ডগুলোও নেতাকর্মীদের পড়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘আজ এদেশের মানুষ পেট ভরে ভাত খাবে, তাদের বাসস্থান হবে, চিকিৎসা, শিক্ষার সুযোগ হবে, মানুষ উন্নত জীবন পাবে— এটাই তো ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য, একমাত্র উদ্দেশ্য। একটা দেশের জনগণ সবসময় বঞ্চিত ছিল, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি মহৎ আত্মত্যাগ করে গেছেন। সেই আত্মত্যাগ আমাদের ভুললে চলবে না। আমাদের সেটাই অনুসরণ করে চলতে হবে। দেশের মানুষ যদি ভালো থাকে, দেশের মানুষ যদি সুন্দর জীবন পায়, এরচেয়ে বড় সার্থকতা একজন রাজনীতিবিদের জীবনে আর কিছু হতে পারে না।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার দেখে যেতে পারলেন না। কিন্তু আমি এটা সবসময় বিশ্বাস করি, নিশ্চয়ই তিনি যে দেশের মানুষকে গভীরভাবে ভালোবেসেছেন, হয়তো তিনি আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়ে তিনি আছেন, এই বাংলাদেশের ৫৪ হাজার বর্গমাইলজুড়ে তিনি আছেন।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা এ সময় আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ‘আমি জানি না। সেটা আমি উপলব্ধি করতে পারি, তিনি আছেন। নইলে আমার পক্ষে এত দ্রুত দেশের উন্নতি করা বা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে এতটা অর্জন করা কখনোই সম্ভব হতো না। আমি সবসময় মনে করি, আমার মা-বাবা আমাকে সবসময় ছায়া দিয়ে রেখেছেন বলেই আজকে এটা সম্ভব হচ্ছে। নিশ্চয় তিনি বেহেশতে বসে সব দেখছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং ২০২০ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের সময় বাংলাদেশকে অবশ্যই একটি উন্নত দেশ হিসেবে, ক্ষুধামুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।’ ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশকে আরও উন্নত করার পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন,  ‘২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে।’

বাংলাদেশেকে আর কেউ পেছনে টেনে নিতে পারবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে যেন আর কখনও যুদ্ধাপরাধী, খুনি, সন্ত্রাসী, অগ্নিসন্ত্রাসী ফিরে আসতে না পারে, দেশের মানুষকে সেভাবেই সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রার শুরু, জাতির পিতার যে কথা বলে গেছেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না, কেউ কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই, ভবিষ্যতেও পারবে না। জাতির পিতার প্রতি এটাই আমাদের ওয়াদা।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

বিজ্ঞাপন

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরে সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ, মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদসহ অন্যরা। আলোচনা মঞ্চে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসসদের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। এরপর ১৯৭২ সালের এই দিনে (১০ জানুয়ারি) বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে তার স্বপ্নের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বরাবরের মতো এবারও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করে আওয়ামী লীগ। সকালে সকালে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সকাল সাড়ে ৬টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের কর্মসূচি পালন করা হয়।

ফাইল ছবি

সারাবাংলা/এনআর/এমএনএইচ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর