সুদানে প্রেসিডেন্টকে সমর্থন করে জনতার ক্ষোভের শিকার ইমাম
১২ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:৩৬
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
সুদানে প্রেসিডেন্ট ওমার আল-বাশিরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেতৃত্ব না দেওয়ায় এক প্রভাবশালী ইমামের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়েছে সুদানের জনগণ। জনতার ক্ষোভের মুখে তাকে মসজিদ থেকে অপসারিত করতে বাধ্য হয়েছে নিরাপত্তাকর্মীরা। খবর বিবিসির।
সুদানের রাজধানী খারতৌমের এক মসজিদ থেকে শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) ইমাম আব্দুল হাই ইউসুফকে অপসারিত করা হয়। তিনি প্রায়ই সরকারের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে থাকেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষুব্ধ প্রার্থনাকারীরা ইমামের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলছে, এখান থেকে উঠুন। এই মসজিদ থেকে আমাদের নেতৃত্ব দিন।
ওই সময় বিক্ষুব্ধ জনতাকে উচ্চারণ করতে শোনা যায়, কেবল পতন (এই সরকারের)।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের শেষে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। সম্প্রতি সুদানে জ্বালানি ও রুটির মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিক্ষোভ করেছে তারা। বিক্ষোভে বাশিরের পতনের দাবি জানানো হয়েছে।
যা ঘটেছে শুক্রবারে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, রাজধানীর খাতিম আল-মুরসালিন মসজিদের এক সদস্য ইমাম ইউসুফকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন।
ইউসুফ প্রায়ই তার অনুসারীদের গাজা বা সিরিয়ার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে উৎসাহিত করে থাকেন। পূর্বে তিনি সরকারের প্রতি দেশটিতে চলমান অস্থিরতা রোধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
অপর এক ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষুব্ধ জনতা মসজিদের বাইরে মিছিল করছে। ভিডিওগুলোর সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোন নিহতের ঘটনা ঘটেনি।
যে কারণে বিক্ষোভ
সুদানে বিক্ষোভ শুরু হয় ১৯ ডিসেম্বর। ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়েই এই বিক্ষোভের শুরু। বিক্ষোভকারীরা বাশির সরকারের পতনের দাবি জানিয়েছে।
১৯৮৯ সালে আক সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসেন বাশির। তার বিরুদ্ধে সুদানের অর্থনীতি যথাযথভাবে পরিচালনা না করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিগত ২০ বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে দেশটির অর্থনীতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ। অবশ্য ২০১৭ সালের অক্টোবরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তাতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি সুদানের অর্থনীতির।
বাশির সরকারের বিরুদ্ধে বিস্তৃত আকারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৯ ও ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বাশিরকে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। তার বিরুদ্ধে জারি করা হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা।
উল্লেখ্য, সুদানের সাম্প্রতিক বিক্ষোভে দেশজুড়ে অন্তত ২২ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
সারাবাংলা/ আরএ