Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদেশে মাদক পাচার রোধে শাহ আমানতে ‘জিরো টলারেন্স’


১২ জানুয়ারি ২০১৯ ১৬:১১

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যে মাদক পাচার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে এরইমধ্যে জোরাদার করা হয়েছে তল্লাশী ব্যবস্থা। কঠোর নজরদারিতে আনা হয়েছে যাত্রীদের ব্যাগসহ মালামাল।

সম্প্রতি নিজ দপ্তরের সভাকক্ষে চট্টগ্রাম সমিতি ওমানের প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠকে এসব তথ্য জানান বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার এবিএম সারওয়ার-ই-জামান।

চট্টগ্রাম সমিতি ওমানের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী সভায় মাদকদ্রব্যের চালান ধরা পড়ায় ওমান বিমানবন্দরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দুর্ভোগ চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘খাবার, দাঁতের মাজন, পেস্টসহ নানা মাধ্যমে যাওয়া ইয়াবা-গাঁজার চালান আটকের পর বাংলাদেশি যাত্রীদের কঠোর তল্লাশিতে পড়তে হচ্ছে। যা দেশের ইমেজেই ক্ষুণ হচ্ছে না শুধু, জনশক্তি বাজারের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কতিপয়ের অপকর্মে দুশ্চিন্তায় আছেন প্রায় ৮ লাখ ওমানপ্রবাসী। এজন্য চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিমানবন্দরে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এর আগে ৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের ‘প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানেও একই অভিযোগ করেছিলেন ইয়াছিন চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন, কিছুসংখ্যক প্রবাসী কিছুদিন ধরে ওমানে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদক নিয়ে যাচ্ছে। ইয়াবা, গাঁজার চালান ওমানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা বুঝতে পারছি না, এতবড় মাদকের চালান চট্টগ্রাম কিংবা ঢাকা বিমানবন্দর দিয়ে কিভাবে পার হচ্ছে? সেগুলো ওমান পর্যন্ত যাচ্ছে কিভাবে, তাহলে কি দেশের বিমানবন্দরে তল্লাশি সঠিকভাবে হচ্ছে না?

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ আমলে নিয়ে বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন বিভাগের ব্যবস্থাপক সারওয়ার-ই-জামান বলেন, ‘ওমানে মাদক পাচারের তথ্য এই প্রথম জানা গেছে। বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। আমাদের অত্যাধুনিক স্কেনার দিয়ে এসব পার হবার সুযোগ কম। তারপরও তল্লাশি জোরদার ছাড়াও বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। এছাড়া দূতাবাসের মাধ্যমে আটকদের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে দেশি হোতাদের খুজে বের করতে জানানো হবে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে।’

বিমানবন্দরে প্রবাসীদের সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে প্রবাসীদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব ও সবোর্চ্চ সেবা দেয়া হয়ে থাকে। তাদেরই জন্য খোলা হয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও সার্বক্ষনিক তথ্যকেন্দ্র টার্মিনাল ভবন জুড়ে সুপেয় পানির কল ও টেলিভিশন বসানো হয়েছে। সহজ ও দ্রুত করা হয়েছে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া। এরপরও তাদের যেকোন অভিযোগ আগ্রধিকার ভিত্তিতে সমাধানের নিশ্চিয়তা দিচ্ছি। অপেক্ষামান কক্ষটি আধুনিকায়নসহ প্রবাসী সিআইপিদের জন্য আরও কিছু বিশেষ সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ব্যবস্থাপক।’

বিমানবন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক’র উপ-পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম মজুমদার বিদেশ থেকে আসা মরদেহ ও অসুস্থদের পরিবহন সুবিধাসহ প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার তথ্য দিয়ে বলেন, বহির্গমন কার্ড পূরণ করতে দুজন কর্মী নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ফলে লেখাপড়া না জানা প্রবাসীদের কার্ড পূরণে আর দুর্ভোগে পড়তে হবে না।

অবৈধ গমন ঠেকানোর পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবোর্চ্চ সর্তকতা অবলম্বনের কথা উল্লেখ করে ইমিগ্রেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, এ জন্য কোন কোন যাত্রীর ক্ষেত্রে কিছুটা সময় নিতে হচ্ছে। দেশের সুনামের স্বার্থে আমাদের তা করতেই হচ্ছে। তারপরও প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী নির্ধরিত সময়েই তাদের ফ্লাইট ধরছেন। ই-ভিসার পর ই-ইমিগ্রেসন চালু হলে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয় দ্রুত ও সহজ হয়ে যাবে বলে তিনি আশা করেন।

বিজ্ঞাপন

ওমান থেকে দেশে মরদেহ পরিবহনে জটিলতার বিষয়টি উধর্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনবেন বলে জানান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স‘র সহকারী স্টেশন ব্যবস্থাপক ইমরুল হাসান আনসারী।

একই সভায় চট্টগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিক এজাজ মাহমুদ বলেন, তল্লাশি জোরদারে প্রবাসীদের দুর্ভোগ যেন না বাড়ে, সেদিকে যেমন খেয়াল রাখতে হবে তেমনি প্রবাসীদেরও সর্তক হতে হবে চালানী গ্রহণে। অচেনার চালানী না নেয়া আর চেনা জনের চালানী পরীক্ষা করে নেয়াই উত্তম। ওমানে আটকদের অনেকেই শুধু চালানীর জন্যই বিপদে পড়েছেন।

গত বৃহস্পতিআর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বিমানবন্দর এপিবিএন-এর সহকারি পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির খান, কাস্টমস কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক, স্টেশন যোগাযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ, নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের স্টেশন ইনচার্জ মো. মাঈনুল ইসলাম, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ডেপুটি স্টেশন ইনচার্জ জেসমিন আক্তার জেসি, বিমানবন্দর আনসার ক্যাম্পের কমান্ডার মো. শফিুকল ইসলাম, নিরাপত্তা সুপারভাইজার মো. মেশকাত হোসেন, মো. ইউছুফ ও মো.কামরুজ্জামান এবং চট্টগ্রাম সমিতির উপদেষ্টা মো. সামসুল আজিম আনছার সিআইপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী শাবু এবং আমেরিকা প্রবাসী মোহাম্মদ সামশুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জিরো টলারেন্স মাদক পাচার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর