Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডুয়েট উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ বাড়ছে


১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ১১:১৬

।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা : প্রকল্প শুরু করতে দেরি হওয়াসহ নানা কারণে খরচ ও মেয়াদ বাড়ছে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) উন্নয়ন প্রকল্পে। এটির মূল খরচ ছিল  ২৭৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সেখান থেকে ২৮৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা বৃদ্ধি করে এখন  ৫৬১ কোটি ৮০ লাখ টাকা করা হচ্ছে।

এছাড়া প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু এখন দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্ব পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এজন্য ‘ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়ন করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও বুয়েট কর্তৃপক্ষ।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত। ইতোমধ্যেই সভার কার্যবিবরণীও জারি করা হয়েছে। ওই সভায় সেসব সুপারিশ দেয়া হয়েছে সেগুলো প্রতিপালন করে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (আরডিপিপি) পুনরায় পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে তারপর অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে।

কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৮০ সালে ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে এটি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়টির অবকাঠামোগত ও একাডেমিক সুবিধাদি বৃদ্ধির জন্য ২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল একনেক সভায় ‘ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২৭৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৬ সালের জানুয়ারি হতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু প্রকল্পটি অনুমোদনের  ১০ মাস পরে শুরু হওয়ায় প্রকল্পের সামগ্রিক কার্যক্রম ও অগ্রগতি বিলম্বিত হয়। এছাড়া পূর্ত কাজের রেট সিডিউল পরিবর্তন, ভ্যাট ও ট্যাক্স হার বৃদ্ধি, কিছু নতুন আইটেম-এর অন্তর্ভুক্তি, রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধি, পূর্ত কাজের ধরন পরিবর্তন, নতুন জমি অধিগ্রহণ ইত্যাদি কারণে প্রকল্প ব্যয় ২৮৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা বৃদ্ধি করে মোট ৫৬১ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৬ সালের জানুয়ারি হতে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, পিইসি সভায় প্রস্তাবিত আরডিপিপিতে পুরাতন ক্যাম্পাসে টাওয়ার ভবনের ঊর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণ এবং পার্কিং সুবিধাসহ ১০তলা শিক্ষক ডরমিটরি শীর্ষক নতুন পূর্তকাজের অন্তর্ভূক্তি করন ও যৌক্তিকতা আলোচনা করে নতুন অংশ দুটি আরডিপিপি থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে মত প্রকাশ করা হয়।

প্রকল্পের আওতায় অনুমোদিত ভবনগুলোর আয়তন ও পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব সভায় আলোচনা করা হয়। বিস্তারিত আলোচনায় এই পরিমাণ বৃদ্ধির কারণগুলো সুনির্দিষ্টভাবে আরডিপিপিতে উল্লেখের বিষয়ে সভায় মত প্রকাশ করা হয় এবং প্রত্যেক ভবনের জন্য একটি স্পেস ইউটিলাইজেশন প্ল্যান সংযুক্ত করার বিষয়ে সভায় ঐক্যমত হয়। এছাড়া প্রতিটি ভবনের বিস্তারিত তথ্য এবং নির্মাণাধীন ভবনগুলোর আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি বিস্তারিত তথ্যাদি আরডিপিপিতে সন্নিবেশের বিষয়ে মত প্রকাশ করা হয়।

মূল ডিপিপিতে ১ হাজার ৮৫০টি মেশিনারি ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি কেনার অনুমোদন থাকলেও প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ৪ হাজার মেশিনারি ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি কেনার প্রস্তাবের কারণ সভায় আলোচনা করা হয়। অতিরিক্ত মেশিনারি ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি কেনার প্রস্তআবটি আরডিপিপি থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে সভায় ঐকমত্য হয়। এছাড়া মূল ডিপিপিতে অনুমোদিত মেশিনারি ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে এই যন্ত্রপাতিগুলোর স্পেসিফিকেশন বিষয়ে সভায় মত ব্যক্ত করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মূল অনুমোদিত ডিপিপিতে অফিস যন্ত্রপাতি, শিক্ষা উপকরণ ও আসবাবপত্র বাবদ যথাক্রমে ৬০ লাখ এবং ১ কোটি এবং ৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সংস্থান থাকলেও প্রস্তাবিত সংশোধনী প্রস্তাবে এসব খাতে যথাক্রমে ৮৭ লাখ, ১ কোটি ৬১ লাখ এবং ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা রাখার প্রস্তাবের কারণ সভায় আলোচনা করা হয়। প্রস্তাবিত ভবনগুলোর আয়তন ও পরিমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অফিস যন্ত্রপাতি, শিক্ষা উপকরণ ও আসবাবপত্রের পরিমাণ ও সংখ্যা নির্ধারণ করতে সভায় মত প্রকাশ করা হয়।

প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১ দশমিক ৮৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করার কারণ আলোচনার সময় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য জানান, এই জমিটি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এবং এটি অধিগ্রহণ করা হলে বিদ্যমান স্থান সংকট কিছুটা হ্রাস পাবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন প্রশাসনিক ভবনের ডিজাইন পরিবর্তনের কারণ সভায় আলোচনা করা হলে  ডিজাইন কেনপরিবর্তন করা হয়েছে এবং কোন পর্যায়ে পরিবর্তন করা হয়েছে তার প্রমাণসহ তথ্যভিত্তিক ব্যাখ্যা আরডিপিপিতে উল্লেক করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত  সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (আরডিপিপি) ফিজিক্যাল ও প্রাইস কনটিনজেন্সি খাতে সংস্থানকৃত অর্থের পরিমাণ মূল অনুমোদিত ডিপিপি থেকে বৃদ্ধি করা হয়েছে যা বাদ দেয়ার বিষয়ে সভায় মত প্রকাশ করা হয়। এছাড়া আরডিপিপির অনুচ্ছেদ ৮ দশমিক শূন্য এ সম্মানী, কনটিনজেন্সি স্টাফ, এন্টারটেইনমেন্ট ব্যয়, সেমিনার ও কনফারেন্স ব্যয়, চাঁদা, প্রচার ও বিজ্ঞাপন, অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন নতুন আইটেম অন্তভুক্ত করার কারণ সভায় আলোচনা করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, নতুন ইকনমিক কোড অনুযায়ী ব্যয় বিভাজন করার ফলে রাজস্ব খাতে পুরাতন আইটেম যেমন, পরিচালন ব্যয় ও বিবিধ ব্যয়ের পরিবর্তে উল্লেখিত নতুন আইটেমগুলো প্রস্তাবিত আরডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে কনসালটেন্সি ফি বাবদ ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা রাখর কারণ সভায় আলোচনা করা হলে এই কন্সালটেন্টের টিওআর সুনির্দিষ্টভাবে প্রণয়ন করে আরডিপিপিতে সংযুক্ত করার বিষয়ে সভায় মত প্রকাশ করা হয়। এছাড়া কনসালটেন্ট অংশের শিরোনাম পরিবর্তন করে সুপারভিশন কন্সালটেন্ট এবং ডিজাইন কন্সালটেন্ট এবং পৃথকভাবে তাদের ইনপুট ও টিওআর আরডিপিপিতে প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/জেজে/এসআই/এসএমএন

ডুয়েট প্রকল্প

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর