পোশাক শ্রমিকদের মজুরি সমন্বয়, ৭ম গ্রেডে বেতন বাড়েনি
১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:৫৫
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: পোশাক শ্রমিকদের দাবির মুখে তাদের মজুরি গ্রেডে সমন্বয় করেছে সরকার। রোববার (১৩ জানুয়ারি) শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মালিক-শ্রমিক ও প্রশসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। বৈঠকে অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
প্রথম গ্রেডের একজন পোশাক কর্মী সব মিলিয়ে ১৮ হাজার ২৫৭ টাকা বেতন পাবেন। ২০১৮ সালে নতুন মজুরি কাঠামোর গেজেটে তা ১৭ হাজার ৫১০ টাকা করা হয়েছিল।
দ্বিতীয় গ্রেডের সর্বমোট বেতন ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪১৬ টাকা। ২০১৮ সালে মজুরি কাঠামোর গেজেটে তা ১৪ হাজার ৬৩০ টাকা ছিল।
তৃতীয় গ্রেডের সর্বমোট বেতন ঠিক হয়েছে ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা, যা ২০১৮ সালের গেজেটে ৯ হাজার ৫৯০ টাকা করা হয়েছিল।
চতুর্থ গ্রেডের সর্বমোট বেতন ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৩৪৭ টাকা। ২০১৮ সালে মজুরি কাঠামোর গেজেটে তা ৯ হাজার ২৪৫ টাকা করা হয়েছিল।
পঞ্চম গ্রেডে সর্বমোট বেতন ঠিক হয়েছে ৮ হাজার ৮৭৫ টাকা, যা ২০১৮ সালে ৮ হাজার ৮৪৫ টাকা করা হয়েছিল।
ষষ্ঠ গ্রেডের সর্বমোট বেতন ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৪২০ টাকা। ২০১৮ সালে মজুরি কাঠামোর গেজেটে তা করা হয়েছিল ৮ হাজার ৪০৫ টাকা করা হয়েছিল।
আর সপ্তম গ্রেডের মজুরি সব মিলিয়ে গেজেটের মতই আট হাজার টাকা রাখা হয়েছে। ২০১৩ সালের কাঠামোতে সর্বনিম্ন গ্রেডের বেতন ছিল ৫৩০০ টাকা।
সমন্বয় করা মজুরি কাঠামোতে সপ্তম গ্রেডে কোনো বেতন বাড়েনি। তবে ১ম থেকে ষষ্ঠ গ্রেডে বেতন বাড়ানো হয়েছে। ২০১৮ সালে সপ্তম গ্রেডে বেতন ছিল ৮ হাজার টাকা। নতুন সমন্বয়ে এই বেতন আগেরটাই রাখা হয়েছে।
এর আগে বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন বলেন, ‘শ্রমিক আন্দোলনের নামে যারা ভাঙচুর করেছে তাদের আইনের আওতায় আনতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
অপরদিকে শ্রমিক নেতা আমিনুল হক আমিন বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্যে ঢুকে বহিরাগত যারা হামলা-ভাঙচুর করেছে আমরা চাই তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। তবে নিরীহ কোনো শ্রমিক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া আজকের বৈঠকে সংসদ সদস্য সালাম মুর্শিদী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, বিজিএমইএ এর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, এফবিসিসিআই এর সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সাবেক বিজিএমইএ এর প্রাক্তন সভাপতি আতিকুল ইসলাম, হামিম গ্রুপের চেয়ারম্যান একে আজাদ, জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, জাতীয় শ্রমিক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম শামছুন্নাহার ভূইয়া, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এর সভাপতি আমিরুল হক আমিন, ইন্ড্রাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল এর মহাসচিব সালাউদ্দিন স্বপন এবং শ্রমিক নেতা এড.মন্টু ঘোষ, সিরাজুল ইসলাম রনি, বাবুল আক্তার, নাজমাসহ মালিক-শ্রমিক নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী বেতন পরিশোধের দাবিতে গত ৭ জানুয়ারি থেকে আন্দোলন করে আসছেন রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের এলাকার পোশাক শ্রমিকরা। এক সপ্তাহের টানা আন্দোলনের ফলে পোশাক শিল্পে অচলাবস্থা তৈরি হয়। কোথাও কোথাও পোশাক শ্রমিকদের পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবিও মোতায়েন করা হয়।
শ্রমিকদের দাবি পূরণের বিষয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে