সংরক্ষিত নারী আসনে আলোচনায় সংস্কৃতি অঙ্গনের তারকারা
১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:২৭
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে শপথ নিয়েছে নবগঠিত মন্ত্রিসভাও। এবারে আলোচনায় উঠে এসেছে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যদের নির্বাচন। এরই মধ্যে সোমবার (১৪ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে এর আগে থেকেই সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য হতে আগ্রহীদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। এই তালিকায় রয়েছেন দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একঝাঁক তারকাও।
এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণাতে অংশ নিতে দেখা গেছে তারকাদের। প্রতিষ্ঠিত নারী রাজনীতিবিদদের সঙ্গে প্রচারণার মাঠে সরব ছিলেন সুবর্ণা মুস্তাফা, শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচী, অঞ্জনা, তারিন জাহান, শামীমা তুষ্টি, তানভিন সুইটি, বাঁধন, পূর্ণিমা, অপু বিশ্বাসসহ আরও অনেকে। তাদের উপস্থিতি এবারের প্রচারণায় যোগ করে ভিন্ন মাত্রা।
আরও পড়ুন: সংরক্ষিত নারী আসনে তফসিল ১৭ ফেব্রুয়ারি
নির্বাচনের উত্তাপ শেষ হতে না হতেই সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যদের নির্বাচনের আলোচনা শুরু হওয়ায় প্রচারণার মাঠে সরব এসব তারকার নাম রয়েছে আলোচনায়। এছাড়া আলোচনায় আছেন নবম জাতীয় সংসদে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে বিজয়ী হয়ে আসা চিত্রনায়িকা সারাহ বেগম কবরী। রয়েছেন নবম ও দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য তারানা হালিমও, যিনি সদ্য শেষ মন্ত্রিসভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী এবং পরে তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ভোটের লড়াইয়ে অংশ নিতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন তারানা হালিম (টাঙ্গাইল-৬), শমী কায়সার (ফেনী-৩), রোকেয়া প্রাচী (ফেনী-৩) ও তারিন জাহান (ঢাকা-১০)।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় বিশিষ্ট অভিনেত্রী, নির্মাতা ও বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া প্রাচী মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবারের সংসদ নির্বাচনে সরাসারি অংশ নিতে মনোনয়নপত্র নিয়েছিলাম। তবে দল থেকে মহাজোটের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় নেত্রীর নির্দেশে মহাজোটের প্রার্থীর জন্যই কাজ করেছি। এখন এলাকাবাসীর চাওয়া বিবেচনায় সংরক্ষিত আসনের জন্যও মনোনয়নপত্র কিনব।’
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশের এগিয়ে যাওয়ার ধারাতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। ফেনী-৩ আসনে (দাগনভূঞা-সোনাগাজী) এলাকাবাসীর পাশে রয়েছি। যদি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর আস্থা রেখে আমাকে মনোনয়ন দেন, তবে অবশ্যই আমি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাব।
সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনে আরেক আলোচিত প্রার্থী শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে শমী কায়সার। তিনিও ফেনী-৩ আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন নিয়ে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফেনী-৩ আসন আমার নির্বাচনি এলাকা, আমার জন্মভূমি। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যোগ্য মনে করলে তার আস্থা ধরে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির মাধ্যমে একজন কর্মী হিসেবে এলাকাবাসীর জন্যে কাজ করে যাব— এটিই আমার প্রত্যয়। আমার বিশ্বাস, আমি নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারব।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এতে ২৫৭টি আসনে জয় পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভার শপথ শেষে মন্ত্রীরা দায়িত্বও পালন করতে শুরু করেছেন।
এদিকে, ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে। সে হিসাবে আগামী ১ এপ্রিলের মধ্যে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে হবে।
এর মধ্যেই সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, কমিশন সভায় আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, আগামীকাল মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়নপত্র বিক্রির কার্যক্রম শুরু করবে দলটি।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর