Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে গণপিটুনিতে মহিউদ্দিন সোহেল হত্যায় বন্ধু গ্রেফতার


১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ২০:৩৭

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. মহিউদ্দিন সোহেল হত্যা মামলায় নিহতের বন্ধু রিদোয়ান ফারুক রাজীবকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মহিউদ্দিন সোহেলকে হত্যার পুরো পরিকল্পনা রিদোয়ান ফারুক জানতেন। ‘কিলিং স্কোয়াডের’ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড হাতে আসার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। হত্যা পরিকল্পনার কথা জেনেও হত্যাকাণ্ডের পর নির্বিকার ছিলেন ফারুক, এমনকি সোহেলের জানাজায়ও তিনি অংশ নিয়েছিলেন। তবে তার নাম মামলার এজাহারে নেই।

রোববার (১৩ জানুয়ারি) গভীর রাতে রিদোয়ান ফারুককে নগরীর পাহাড়তলী বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে আদালতে হাজিরের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম।

চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন সোহেল হত্য মামলায় জাপা নেতা গ্রেফতার

গ্রেফতার রিদোয়ান ফারুক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

৭ জানুয়ারি সকালে নগরীর ডবলমুরিং থানার পাহাড়তলী বাজারে মহিউদ্দিন সোহেলের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পুলিশ ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানায়, চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনতা মিলে মহিউদ্দিন সোহেলকে গণপিটুনি দেয় এবং এতেই তার মৃত্যু হয়।

তবে পরদিন তার পরিবারের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মহিউদ্দিন সোহেল কোনো ছিঁচকে চাঁদাবাজ কিংবা সন্ত্রাসী ছিলেন না। জন্মস্থান পাহাড়তলীকে ‘সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত’ করার কাজে হাত দিয়ে তিনি কাউন্সিলর সাবের সওদাগর ও ওসমান খানের রোষানলে পড়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের আগেরদিন মামলার আসামিদের কয়েকজনের সঙ্গে ফারুকের কথা হয়। সেই তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আছে। কিলিং স্কোয়াডের কয়েকজনের সঙ্গে কনভারসেশনের একটি অডিও আমরা পেয়েছি। সার্বিকভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি।’

‘গণপিটুনিতে’ মৃত্যুর ঘটনায় কাউন্সিলরসহ ১৭৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যার পরিকল্পনার কথা জেনে মহিউদ্দিন সোহেলকে সাবধানে থাকার পরামশ দিয়েছিলেন ফারুক। পরিকল্পনাকারী একজনের নাম উল্লেখ করে ফারুক বলেছিলেন, ওই ব্যক্তি সোহেলের উপর খুবই ক্ষুব্ধ। ফারুকের কথা শুনে হত্যার আগের রাতে মহিউদ্দিন সোহেল তার অনুসারী কয়েকজন যুবককে পাঠিয়ে ওই পরিকল্পনাকারীর উপর হামলাও করান। পরদিন সকালেই মহিউদ্দিন সোহেল খুন হন।

সূত্রমতে, পাহাড়তলী বাজারের আশপাশে মাদকের আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত কয়েকটি দোকান উচ্ছেদে ভূমিকা রাখেন মহিউদ্দিন সোহেল। উচ্ছেদ করা দোকানের মধ্যে রিদোয়ান ফারুকেরও দোকান ছিল। দোকান উচ্ছেদের পর বন্ধু হলেও মহিউদ্দিন সোহেলের প্রতিপক্ষ হয়ে যান ফারুক।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা রিদোয়ান ফারুককে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করব। তবে সে হত্যার পুরো পরিকল্পনা জানতো, এটা আমরা নিশ্চিত। হত্যাকাণ্ডের পর সে পাহাড়তলী বাজারে গিয়েছিল। সোহেলের জানাজায়ও সে অংশ নিয়েছিল।

‘হাতজোড় করে বলছি, আমার ভাই চাঁদাবাজ না’

এর আগে ৮ জানুয়ারি রাতে মহিউদ্দিন সোহেলের ছোট ভাই শাকিরুল ইসলাম শিশির বাদী হয়ে নগরীর ডবলমুরিং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বিজ্ঞাপন

মামলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সরাইপাড়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পাহাড়তলী বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক সাবের আহমদ সওদাগর ও সদস্য ওসমান খানসহ ২৭ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

পরদিন পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওসমান খান এবং পরবর্তীতে আরও চারজনকে গ্রেফতার করে।

নিহত মহিউদ্দিন সোহেল চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন। তিনি একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটিরও নেতা ছিলেন।

রিদওয়ান ফারুকের ছবি : সংগৃহীত

সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন

গণপিটুনি মহিউদ্দিন সোহেল রিদওয়ান ফারুক

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর