ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নাকচ হলো থেরেসার ব্রেক্সিট খসড়া চুক্তি
১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪৯
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
বড় ধরনের ব্যবধানে পার্লামেন্টে নাকচ হয়ে গেছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে‘র ব্রেক্সিট সংক্রান্ত খসড়া চুক্তি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের যে পরিকল্পনা থেরেসা মে পার্লামেন্টে উপস্থাপন করেছিলেন, ৬৫০ সদস্যের পার্লামেন্টে তা ৪৩২-২০২ ভোটে নাকচ হয়ে গেছে। পাঁচ দিন আলোচনার পর মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ হাউস অব কমন্সে ২৩০ ভোটের ব্যবধানে প্রস্তবনা বাতিল হয়ে যায়।
এই পরাজয়ের পর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের থেরেসা মে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ডাক দিয়েছে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। স্থানীয় সময় বুধবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় পার্লামেন্টে এই প্রস্তাবের ওপর ভোটগ্রহণ হবে।
করবিন বলেন, এটা সরকারের জন্য বিপর্যয়কর পরাজয়। সরকারের অযোগ্যতার বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে রায় দেওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।
এখন থেরেসার সামনে দুটি পথ খোলা রয়েছে, একটি হল, তিন দিনের মধ্যে পার্লামেন্টে নতুন আরেকটি চুক্তির খসড়া তোলা, অন্যটি হচ্ছে ইইউর দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা ২৯ মার্চ থেকে আবার বাড়িয়ে নেওয়া। সেটি করা না গেলে আগামী ২৯ মার্চ রাতেই ইউরোপের ২৭টি দেশের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে বড় ধরনের সঙ্কটে পড়তে পারে যুক্তরাজ্য।
এর আগে ২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। পৌনে দুই কোটি ভোটারের ৫২ শতাংশ ভোট ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে, অন্যদিকে ৪৮ শতাংশের ভোট দেয় ইউরোপের আরও ২৭টি দেশের জোটে থেকে যাওয়ার। ভোটে হারের পর তৎকালীন রক্ষণশীল দলের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করলে থেরেসা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে ইইউ থেকে বের হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। বিশেষ করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই জোট থেকে কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য আলাদা হবে এবং এরপর ইইউভুক্ত বাকি ২৭টি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই পথ বের করার জন্য সময় নেওয়া হয় আড়াই বছর।
আগামী ২৯ মার্চ সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে যুক্তরাজ্যকে তার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে হচ্ছে। মূলত ইইউর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে চুক্তি নিয়ে মঙ্গলবার পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষে ভোটাভুটিতে প্রস্তাবটি নাকচ হয়ে যায়। ব্রেক্সিট চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল জোট থেকে বেরিয়ে গেলে যুক্তরাজ্য ৩৯ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ কীভাবে দেবে। সর্ম্পক ছিন্ন হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে বসবাসরত জোটের অন্য দেশগুলোর ৩২ লাখ নাগরিকের ভবিষ্যৎ কী হবে কিংবা ইউরোপের অন্য দেশগুলোতে বসবাসরত যুক্তরাজ্যের ১৩ লাখ নাগরিকের সুযোগ-সুবিধার কী পরিবর্তন ঘটবে। এছাড়াও যুক্তরাজ্যভুক্ত নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এবং ইইউতে থেকে যাওয়া আয়ারল্যান্ডকে আলাদা করতে আবার কীভাবে সীমান্ত তুলতে হবে, তার মীমাংসা করা।
সারাবাংলা/জিএস/টিসি