Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সীতাকুণ্ডে তেলের ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে


১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ১৮:০৬

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাটে তেলের ডিপোতে লাগা আগুন দুই ঘণ্টার চেষ্টায় নেভাতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আগুনে ছয়টি বসতঘর, তেলের ডিপো এবং একটি গাড়ির সার্ভিসিং সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৫৫মিনিটে ফৌজদারহাটের কাছে সলিমপুর আব্দুল্লাহ ঘাটে জাহাজের পরিত্যক্ত তেলের একটি ডিপোয় এই আগুন লাগে। খবর পেয়ে বিভিন্ন স্টেশন থেকে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি অগ্নি নির্বাপক গাড়ি দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়।

বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নেভানো গেছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের উপসহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎুসুদ্দী।

আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে তেলের ডিপোতে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট

ঘটনাস্থলে যাওয়া অধিদফতরের সহকারী পরিচালক জসিম উদ্দিন সারাবাংলাকে জানান, ওই ডিপোটি জাহাজের পরিত্যক্ত তেলের যা স্থানীয়ভাবে কালো তেল হিসেবে পরিচিত। ওই ডিপোতে আগুনের সূত্রপাত হয়। দাহ্য পদার্থ হওয়ায় আগুন দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এর পাশেই রয়েছে একটি গাড়ির ওয়ার্কশপ। আগুন সেখানেও ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আশপাশের কয়েকটি ছাপড়া ঘরও আগুনে পুড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এনায়েত হোসেন সারাবাংলাকে জানান, দুপুরের দিকে হঠাৎ জয়নালের কালো তেলের ডিপো থেকে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে এবং কালো ধোঁয়া বের হতে দেখতে পান। দ্রুত সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন ভেতরে মানুষেরা। মুহূর্তের মধ্যে আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

পূর্ণচন্দ্র মুৎুসুদ্দী সারাবাংলাকে বলেন, রেলওয়ের জায়গায় তিনটি বড় গর্ত করে এবং বেশ কয়েকটি খোলা ড্রামে জাহাজের পরিত্যক্ত তেল রাখা হয়েছিল। সেগুলো থেকে মবিল তৈরি করা হত। এর পাশেই টাটা কোম্পানির একটি সার্ভিসিং সেন্টার ও শো-রুম আছে। সেখানে মেরামতের জন্য রাখা ট্রাক আছে। এছাড়া বিক্রির জন্যও ট্রাক রাখা হয়েছে। এর পেছনে রেললাইনের পাশে আছে কয়েকটি বাঁশের বেড়ার তৈরি বসতঘর। তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেল থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের গাড়িগুলো দুইদিক থেকে পানি ছিটানো শুরু করে। এই কৌশলের কারণে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। সার্ভিসিং সেন্টারে রাখা গাড়িগুলোর তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে ৬টি বসতঘর পুড়ে গেছে।’

পুড়ে যাওয়া একটি বসতঘরের বাসিন্দা ও স্থানীয় শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের শ্রমিক মোহাম্মদ আলী সারাবাংলাকে বলেন, দুপুরে আমি বাসায় ভাত খাচ্ছিলাম। আমার তিন সন্তান বাসার বাইরে ছিল। হঠাৎ আমার স্ত্রী এসে জানায়, বাসার পাশে আগুন লেগেছে। স্ত্রী আমাকে দ্রুত টেনে বাইরে নিয়ে যায়। দেখি, দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। এত তাপ, আমরা আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি।

কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তিনি বলেন, ‘পরনের কাপড় ছাড়া বাসা থেকে কিছুই বের করতে পারিনি। খাব কী, থাকব কোথায় কিছুই জানি না।’

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন সারাবাংলাকে জানান, আগুন লাগার পর মহাসড়কে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এবং শত শত লোকজন জড়ো হয়ে যায়। এসময় আধঘণ্টা এই পথে যান চলাচল বন্ধ ছিল। তবে কাছের রেললাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ

আগুন নিয়ন্ত্রণে ডিপোতে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর