Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শখের বাগান, দিনে ৫শ লিটার খেজুরের রস


১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১১

।। ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

কক্সবাজার: শীতের মৌসুমে খেজুরের রস গ্রাম বাংলার সংস্কৃতিতে বাড়তি আকর্ষণ। ঐতিহ্যবাহী এই খেজুরের রস থেকে শহরের মানুষ বরাবরই বঞ্চিত। এমনকি খেজুরের রসে তৈরি নানা স্বাদের পিঠা-পুলির স্বাদও তাদের সবসময় নেওয়া হয়ে ওঠে না। তবে গাছ কমে যাওয়ায় এখন গ্রামেও খেজুরের রসের দেখা মেলা ভার। একই চিত্র কক্সবাজারেও। তবে এর মধ্যেই কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র দুই কিলোটিমার দূরে শখের বসে একজন গড়ে তুলেছেন খেজুর বাগান। আর সেই বাগানে প্রতিদিন উৎপাদিত হচ্ছে ৫০০ কেজি গুড়!

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলের মনোপাড়ায় স্থানীয় ছালেহ আহম্মদ গড়ে তুলেছেন এই খেজুর বাগান। ৬৪ একর জমির ওপর গড়ে তোলা বাগান থেকে যে রস আসে, তাতে প্রতিদিন প্রায় দুইশ কেজি গুড় তৈরি হচ্ছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ১০ জন অভিজ্ঞ কারিগর খেজুর গাছের এই বাগানটিতে কাজ শুরু করেন। খেজুর গাছ ছাটাই, গাছ থেকে রস সংগ্রহ, খেজুরের রস সিদ্ধ করা এবং গুড় উৎপাদনের বিভিন্ন ধাপে ভোর থেকেই কাজ শুরু করেন তারা।

বাগান মালিক ছালেহ আহম্মদের ছেলে সাইমন ছালেহ বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি পরিবেশের কথা ভেবে ২০০০ সালে শখের বশে খেজুর গাছ লাগাতে শুরু করেন বাবা। ধীরে ধীরে বাগানের আয়তন বাড়তে থাকে। এখন ৬৪ একর জমিতে রয়েছে এই বাগান। গত ৫ বছর ধরে শীত মৌসুমে দৈনিক ৫০০ লিটার করে রস সংগ্রহ করা হচ্ছে বাগান থেকে। এখন এই বাগান থেকে বাণিজ্যিকভাবে রস আহরণ করা হলেও আমাদের মূল উদ্দেশ্য বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখা।

বাগানের কর্মী ফরিদ হোসেন পান্না এসেছেন রাজশাহী থেকে। ফরিদ জানান, শীতের সময়টাতে অর্থাৎ প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ করেন তারা। খেজুর গাছ পরিচর্যা থেকে শুরু করে গুড় সংগ্রহ— সব ধরনের দক্ষতা থাকায় তাদের ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ফরিদ আরও জানান, শীত যত বেশি পড়বে, খেজুরের রস তত বেশি মিষ্টি হবে। সেই রসে গুড়ও ভালো হয়। শীত চলে গেলে এই রস টক হয়ে যায়।

খেজুর বাগানের আরেক কারিগর মান্নান জানান, রস সংগ্রহের জন্য বিশেষ কৌশলে গাছ কাটতে হয়। প্রাথমিক অবস্থায় ওই রস পাতলা থাকে। পরে সেদ্ধ করে ঘনত্ব বাড়ানো হয়। ঘনত্ব নির্দিষ্ট পরিমাণে পৌঁছালে রস লালচে বর্ণ ধারণ করে ‘রাফে’ পরিণত হয়। এরপর আরও সিদ্ধ করে গুড় তৈরির উপযোগী করে রস বিভিন্ন ছাঁচে ঢালা হয়। পরে সেই রস ঠাণ্ডা হয়ে সুস্বাদু গুড়ে পরিণত হয়।

কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানান, এই বাগান থেকে উৎপাদিত রস বিক্রির মাধ্যমে বাগানের মালিক যেমন লাভবান হচ্ছেন, ঠিক তেমনি স্থানীয়দের মধ্যে খেজুর রসের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। ছালেহ আহম্মদের মতো আরও অনেকেই খেজুর বাগান গড়ে তোলা বা রস উৎপাদনে এগিয়ে আসতে পারেন। খেজুর বাগান পরিবেশের ভারসাম্য রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে জানান তিনি।

সারাবাংলা/এনএইচ/টিআর

খেজুর বাগান

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর