Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সান্তাহারে রেল ওয়াগন নিলামে কারসাজি, বাড়তি মাল সরবরাহের অভিযোগ


১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৯:০৩

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বগুড়া: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার রেলওয়ে জংশনের ইয়ার্ডে থাকা ৭৬টি ওয়াগন ‘পানির দামে’ নিলাম করাসহ অতিরিক্ত মালামাল সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ওয়াগন ভেঙে ঠিকাদারের কাছে সরবরাহের সময় রেলওয়ের কোনো কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। সেই সুযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজেদের ইচ্ছেমতো বাড়তি মালামাল নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

বিজ্ঞাপন

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সান্তাহার জংশনে থাকা ৩৭টি মিটারগেজ ও ৩৯টি ব্রডগেজ মিলিয়ে মোট ৭৬টি ওয়াগনের নিলাম হয়। রেলওয়ে পশ্চিম অঞ্চল জোনের সিওএস-পশ্চিম-রাজশাহী নথি নম্বর-সেল ২০১৮/০৮ ও ১০ এবং বিক্রয়াদেশ নম্বর ২০১৮/৩৬ ও ৩৭ দরপত্র অনুযায়ী ওয়াগনগুলো কেটে চট্টগ্রামের পাথরঘাটার মেসার্স মঈন উদ্দীন জাভেদ ট্রেডার্সকে সরবরাহের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। নথি অনুযায়ী, বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের (পশ্চিম) পক্ষ থেকে সৈয়দপুর জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতেই সান্তাহার স্টেশন ইয়ার্ড থেকে ওয়াগানগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

অভিযোগ ওঠে, মঈন উদ্দীন জাভেদ ট্রেডার্সকে প্রকৃত দামের চেয়ে অনেক কম দামে ওয়াগন কেটে সরবরাহের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উপেক্ষা করা হয়েছে বাজারমূল্য।

এদিকে, দরপত্র অনুযায়ী মিটারগেজের এমজি ৩৭টি ওয়াগনের প্রতিটি থেকে পৌনে দুই টন ও ব্রডগ্রেজের ৩৯টি ওয়াগনের প্রতিটি থেকে পাঁচ টন মালামাল সরবরাহ করার কথা রয়েছে। সরবরাহের সময় রেলওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টক ভেরিফায়ার সাহিদ হোসেনেরও উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু রেলের কোনো কর্মকর্তাকেই ওয়াগন কেটে মালামাল সরবরাহের সময় উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। সেই সুযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাড়তি মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। ৭৬টি ওয়াগন সরবরাহের কথা থাকলেও তারা ইয়ার্ডে রক্ষিত বাড়তি ওয়াগনও নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সান্তাহার পৌর এলাকার সাবেক কাউন্সিলর আসলাম সিকদার বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাড়তি মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। সবাই বলছেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেলিভেরি কর্মকর্তা সাহিদ হোসেনের সঙ্গে ক্রেতা বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যোগসাজস করে এই নিলাম বাগিয়ে নিয়েছে। এতে করে রেলের কোটি কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী সারাবাংলাকে বলেন, নিলামের মালামালের মধ্যে ওয়াগনের শুধু প্লেট সরবরাহের কথা উল্লেখ রয়েছে। স্প্রিং, সোর প্লেট, স্কেল বক্স, এক্সেল গার্ড ও দরজা জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এসব মালামালও নিয়ে যাচ্ছে তারা। কিন্তু দেখার কেউ নেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি ভিত্তিতে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

সান্তাহার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মন্টু বলেন, রেল বিভাগের লোকজনের সঙ্গে যোগসাজস করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদেরও হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।

এসব বিষয়ে জানতে স্টক ভেরিফায়ার সাহিদ হোসেনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভড করেননি। তবে সান্তাহার ক্যারেজ বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী আনছার আলী মৃধা নিলাম ও ওয়াগন সরবরাহে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওয়াগন ভেঙে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে গ্যাস দিয়ে মালামাল কেটে নিতে হচ্ছে। সেজন্য কিছু মাল বেশি যেতে পারে।

সারাবাংলা/টিআর

নিলামে কারসাজি বগুড়া রেল ওয়াগন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর