অস্ট্রেলিয়া মিশনের প্রথম সচিবকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার নেপথ্যে
১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:০০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের কেনবেরা হাইকমিশন মিশনের প্রথম সচিব নাজমা আক্তারকে গত বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) ঢাকায় ফেরত আনা হয়েছে। তবে কী কারণে তাকে ঢাকায় ফেরত আনা হয়েছে, তা পরিষ্কার করছে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কয়েকজন সদস্যকে বাংলাদেশের ভুয়া ভিসা পাইয়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নাজমা আক্তারকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনীতিকরা বলছেন, নাজমা আক্তারের বদলির সময় হওয়ায় তাকে ঢাকায় বদলি করা হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কয়েকজন সদস্যকে বাংলাদেশের ভুয়া ভিসা পাইয়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের কেনবেরা হাইকমিশন মিশনের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তিনি হচ্ছেন, কেনবেরা হাইকমিশন মিশনের প্রথম সচিব নাজমা আক্তার। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে ওই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে।
অস্ট্রেলিয়া থেকে গত ডিসেম্বরে ঢাকায় ট্যুরিস্ট ভিসায় বেড়াতে আসা অন্তত ২০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেন ঢাকার বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আটক রোহিঙ্গারা অস্ট্রেলিয়ায় বাস করছিলেন। তবে তাদের পরিবার ও স্বজনরা কক্সবাজারের একাধিক রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।
আটক রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, তারা পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বাংলাদেশে পর্যটন ভিসায় আসেন। ভিসা পাইয়ে দিতে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের কেনবেরা হাইকমিশন মিশনের একজন কর্মকর্তা সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু ঢাকা বিমানবন্দরে আসার পর ভুয়া ভিসার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়।
এই প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান জানান, ‘এই বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. সালাউদ্দিন নোমান চৌধুরীর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলা’কে বলেন, ‘কেনবেরা হাইকমিশন মিশনের প্রথম সচিব নাজমা আক্তারকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফেরত আনা হয়েছে।’
কী কারণে ফেরত আনা হয়েছে জানতে চাইলে মো. সালাউদ্দিন নোমান চৌধুরী বলেন, ‘তার বদলির সময় হয়ে গেছে, তাই তার নিয়োগ ঢাকায় বদলি করা হয়েছে।’
রোহিঙ্গাদের ভুয়া ভিসা দেওয়ার অভিযোগে তাকে ফেরত আনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশিয়া ও প্যাসিফিক) মাহবুব-উজ-জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলা’কে বলেন, ‘বিষয়টি আমি দেখি না।’ তিনি এই প্রতিবেদককে কনস্যুলার শাখার দায়িত্বে থাকা কূটনীতিকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (কনস্যুলার) কামরুল আহসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলা’কে বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ’ বিষয়টি প্রশাসনের লোকজন জানবেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সারাবাংলা/জেআইএল/এমএনএইচ