শহীদ আসাদ দিবস আজ
২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:১৫
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
ঢাকা: শহীদ আসাদ দিবস রোববার (২০ জানুয়ারি)। প্রতি বছরের মতো যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতনের দাবিতে মিছিল করার সময় ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি গণ-আন্দোলনের পথিকৃৎ আসাদ পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। সে সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আসাদ ছিলেন তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের তিন শহীদদের একজন। অন্য দু’জন হলেন শহীদ রস্তম ও শহীদ মতিউর।
শহীদ আসাদ ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা দাবির পক্ষে এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আসামিদের মুক্তির দাবিতে চলা আন্দোলনে আসাদের মৃত্যু পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তোলে। যা পরবর্তীতে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে তরান্বিত করে। ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রদের ১১ দফা এবং বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করেন ছাত্র সংগঠনের নেতারা। ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্ররা দেশব্যাপী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দেয়। তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খান ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ১৪৪ ধারা আইন জারি করেন।
পূর্ব কর্মসূচি অনুসারে, ২০ জানুয়ারি দুপুরে ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চাঁন খাঁর পুল এলাকায় মিছিল নিয়ে এগুচ্ছিলেন আসাদুজ্জামান। পুলিশ তাদের চাঁন খাঁ’র পুলে বাধা দেয় ও চলে যেতে বলে। কিন্তু বিক্ষোভকারী ছাত্ররা সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করে। আসাদ ও তার সহযোগিরা স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে এগুতে শুরু করে। ওই অবস্থায় খুব কাছ থেকে আসাদকে লক্ষ্য করে এক পুলিশ অফিসার গুলি চালালে তিনি গুরুতর আহত হন। আসাদকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আসাদের মৃত্যুতে একত্রিত হয়ে হাজারো ছাত্র-জনতা ফের মিছিল বের করে এবং শহীদ মিনারের পাদদেশে জমায়েত হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি সারাদেশে ধর্মঘট আহ্বান করে। ধর্মঘটের শেষ দিনে পুলিশ ফের গুলি চালায়।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখায় ২০১৮ সালে শহীদ আসাদকে মরণোত্তর সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিস্বরূপ স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। আসাদের মৃত্যুর পর বাংলাদেশের অনেক জায়গায় জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আইয়ুব খানের নামফলক পরিবর্তন করে শহীদ আসাদ রাখে। তারই ধারাবাহিকতায় মোহাম্মদপুরে আইয়ুব গেটের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আসাদ গেট।
শহীদ আসাদের ৫০তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে “শহীদ আসাদ দিবস ও ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের ৫০ বছর পালন জাতীয় কমিটি” রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে নির্মিত আসাদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। শহীদ আসাদ স্মৃতিস্তম্ভ এবং তার গ্রাম নরসিংদীর শিবপুরে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির নেতারা।
সেই সঙ্গে বেলা ১১টায় নরসিংদীর শিবপুরে শহীদ আসাদের কবরেও পুষ্পস্তবক দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে পোস্টার ও স্মরণিকা সুভ্যেনির প্রকাশ করা হয়েছে।
আগামী ২৪ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দ্বীপে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এটি/এসএন
ধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শহীদ আসাদ দিবস