মজুদ থাকা দেশীয় ওষুধে এবার ‘ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন’
২০ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:১৪
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: এবার দেশীয় কোম্পানির কাছ থেকে কেনা ওষুধেই আস্থা রাখছে জাতীয় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান। যার মেয়াদ রয়েছে আগামী বছর পর্যন্ত। এই দেশীয় ভিটামিন এ ওষুধ দিয়েই শিগগিরই নতুন করে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের তারিখ ঘোষণা করা হবে বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটি। শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) দেশজুড়ে ঘোষিত হওয়া ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন স্থগিত হওয়ার পর নতুন করে কবে নাগাদ এ তারিখ ঘোষণা করা হবে, কোন ওষুধ খাওয়ানো হবে, সে বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।
জানতে চাইল জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে, শিগগিরই নতুন তারিখ ঘোষণা করব।’
নতুন ওষুধ কবে কাদের কাছ থেকে কেনা হয়েছিল, জানতে চাইলে অধ্যাপক ইউনুস বলেন, ‘গত বছর দেশীয় এক কোম্পানির কাছ থেকে এই ওষুধ কেনা হয়েছিল। আমরা সবকিছু দেখে এই ওষুধ খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, মান খারাপসহ চার কারণে শনিবারের ভিটামিন এ ক্যাপসুল ক্যাম্পেইন স্থগিত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ক্যাম্পেইন সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠা, ক্যাপসুলগুলোর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাব, ক্যাপসুলে ছত্রাকের বিস্তার ও শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি—এই চার কারণ বিবেচনায় নিয়ে ক্যাম্পেইনটি স্থগিত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান কিশোরগঞ্জে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুলের নমুনা পর্যবেক্ষণের সময় বলেছেন, ‘ক্যাপসুলের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন স্থগিত করা হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আদালতে মামলা করে ভারতীয় ওই অখ্যাত কোম্পানি নিম্নমানের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল কিনতে আমাদের বাধ্য করেছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ক্যাপসুলের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।।’’
ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘‘ভারতীয় ওই কোম্পানির কোনো সুনাম নেই। মামলা করে তারা আমাদের ‘এ’ ক্যাপসুল কিনতে বাধ্য করেছে। লাল ক্যাপসুল নিয়ে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেনো এ রকম হলো পরীক্ষার পর তা বলা যাবে। তবে দেশীয় কোম্পানি থেকে কেনা সবুজ রঙের ট্যাবলেটে কোনো সমস্যা নেই।। ’’
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরবরাহ করা এসব ক্যাপসুল কৌটায় একটার সঙ্গে আরেকটার সঙ্গে লেগে আছে। আলাদা করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পেইন শুরুর তারিখ ঘোষণা করা হবে। ক্যাপসুলের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এরইমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠন করা কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক বলছেন, ক্যাম্পেইনের বিষয়টি হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আরও আগে কেন ক্যাপসুলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলো না, সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলছেন তারা।
প্রসঙ্গত, এবার ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা ছিল। জাতীয় পুষ্টি কর্মসূচির আওতায় দেশজুড়ে ৬ থেকে ১১মাস বয়সী ২৫ লাখ শিশু এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের নীল ও লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা ছিল।
সারাবাংলা/জেএ/এমএনএইচ