অপরাধীদের শুধু শাস্তি নয়, পুনর্বাসনও জরুরি: প্রধানমন্ত্রী
২০ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:৫২
।।সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: সমাজে অপরাধ প্রবণতার হার কমিয়ে আনতে অপরাধ দমনের পাশাপাশি প্রতিকারের প্রতি দৃষ্টি দিতেও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দিলেই যে অপরাধ দমন হয়ে যাবে, তা নয়। তাদের সমাজে সুস্থ জীবন দিয়ে ফিরিয়ে আনতে পারাটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ রোববার (২০ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
টানা তৃতীয় বার ও মোট চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন উপলক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের অংশ হিসেবে এদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান শেখ হাসিনা।
এ সময় জলদস্যু ও বনদস্যুদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করানোর পর তাদের সমাজে পুনর্বাসনেও তার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের পুনর্বাসন করা না গেলে তারা আবারও ওই পথে ফিরে যেতে পারে।’
শেখ হাসিনা দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গিবাদ উচ্ছেদ করে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় দুর্নীতি একটি কালো ব্যাধির মতো ছেয়ে গেছে। কারণ যে দেশে সামরিক সরকাররা ক্ষমতায় আসে, তারা প্রথমে সমাজটাকে ধ্বংস করে দেয়। কারণ দুর্নীতিটাকেই তারা নীতি হিসেবে নেয়। দুর্নীতির সুযোগও সৃষ্টি করে দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটি দেশকে যদি আমরা উন্নত করতে যাই, তাহলে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্ণীতির হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।’
অতীতে দেশে জঙ্গিবাদ তথা বাংলা ভাই সৃষ্টিতে সে সময়কার সরকারের (বিএনপি-জামায়াত) একটি প্রচ্ছন্ন মদদ ছিল উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘তারা (জঙ্গিরা) মিছিল করছে আর পুলিশ তাদের পাহারা দিচ্ছে। এ রকম দুঃখজনক ঘটনাও আমরা বাংলাদেশে দেখেছি। আর মাদক তো ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।’
দেশব্যাপী চলমান মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি কারা মাদক দেশে নিয়ে আসছে, কারা ব্যবসা বরছে এবং কারা সেবন করছে তাদের সবার বিরুদ্ধেই বহুমুখী ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা মাদকটা সেবন করে কেবল তাকেই না, যারা মাদকটা আনে, দেয় বা সাপ্লাই দেয়, তৈরি করে তাদেরও ধরতে হবে। সেইসঙ্গে যারা সুস্থভাবে সমাজে ফিরতে চাইবে তারে সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। মাদকাসক্তদের নিরাময়েরও উদ্যোগ নিতে হবে।’
শেখ হাসিনা এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন এবং মাদকের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থা ও দফতরের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/এসএমএন