Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২৩ জানুয়ারি থেকে বাড়ি ফিরবে রোহিঙ্গারা


১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ২৩:৫০

dav

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট :

ঢাকা : নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আগামী ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ থেকে তাদের বসত-ভিটায় ফেরত নিতে প্রস্তুতি নিয়েছে মিয়ানমার।

বঞ্চিত এই জনগোষ্ঠীকে তাদের বসত-ভিটায় ফিরিয়ে নেয়ার পুরো কার্যক্রম চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠক সোমবার মিয়ানমারের নেপিডোতে অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে টানা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে মঙ্গলবার আবারো বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।

আরও জানা গেছে, মিয়ানমারের ১২৪ একর জমির উপর ৬২৫ টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে অস্থায়ীভাবে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে আশ্রয় দেয়া হবে। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এমন আরও ১০০ টি ভবন নির্মাণ শেষ হবে। ওইসব ভবনেও ফেরত নেয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হবে।

এর আগে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠকে অংশ নিতে রবিবার ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল নেপিডোতে পৌঁছেছে। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুর হকের নেতৃত্বে এই কমিটিতে রয়েছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম, সশস্ত্র বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মনিরুল ইসলাম আখন্দ, সামরিক গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তৌহিদ-উল-ইসলাম, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কমডোর মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. খলিলুর রহমানসহ আরও ৬ জন।

বিজ্ঞাপন

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, শুরুতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ফেরত নিতে চায় মিয়ানমার। অন্যদিকে, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়া করতে চায় না বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, যে কোনো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই জটিল এবং ঝামেলাপূর্ণ। এই জটিল এবং ঝামেলাপূর্ণ কাজটিকে আমরা সহজ ও সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। যাতে নির্যাতিত ও নিপীড়িত রোহিঙ্গা সম্প্রদায় তাদের বসত-ভিটায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ পায়।

 

প্যানোরমায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প

রবিবার মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জো হটও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সকে জানান, ফেরত প্রক্রিয়ার মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন বিষয় ঠিক করতেই সোমবার দুই দেশের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবাসনের যে তালিকা পাঠানো হবে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তা যাচাই বাছাই করে অনুমোদন দিলেই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হবে।

জো হটও আরও জানান, প্রত্যাবাসের প্রথম ধাপে মিয়ানমার ৫০০ হিন্দু এবং ৫০০ মুসলমান রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চায়। বিষয়টি এরই মধ্যে বাংলাদেশকে জানান হয়েছে এবং দেশটি তাতে সম্মতিও জানিয়েছে।

নির্যাতিত এই জনগোষ্ঠীকে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, সামনের ২৩ জানুয়ারির মধ্যে ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার কথা।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতা জোরালো হওয়ার পর হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি মানুষ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এ ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অবহিত করেছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বে বিভিন্ন দেশ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআইএল/এসআরপি

মিয়ানমার রোহিঙ্গা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর