এসএসসি পরীক্ষা: ২৭ জানুয়ারি থেকে একমাস কোচিং বন্ধ
২০ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:৪৬
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে ২৭ জানুয়ারি থেকে একমাসের জন্য সব ধরনের কোচিং বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষায় যেন প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয়, সে জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হবে। এছাড়া, এবার প্রথমবারের মতো অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার মুড়িয়ে কেন্দ্রগুলোতে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হবে।’
রোববার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক বৈঠক শেষে এসব কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
ডা. দীপু মনি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারিসহ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বছরও পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিবের মোবাইল ফোনটিও স্মার্টফোন হতে পারবে না। এসব নিয়ম ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষামন্ত্রী।’
তিনি বলেন, ‘আগামী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে বেশকিছু ব্যবস্থা নিয়েছি। এর মধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রশ্ন পাঠাতে বিশেষ ধরনের খাম ব্যবহার করা হবে। যেটা দেখে বোঝা যাবে খামটি এর আগে কখনোই খোলা হয়নি।’
এ ছাড়া পরীক্ষার হলের আশেপাশে ১৪৪ ধারা জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গুজব রটনাকারীদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে নজরদারি শুরু হয়ে গেছে বলে জানান তিনি। যারা আগেও এ কাজ করেছে বা প্রশ্নফাঁসে যুক্ত ছিল তাদের ব্যপারেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবিষয়ে সচেতনতামূলক তথ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রচার করা হবে। পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা ছাড়া কেউ পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। শুধু কেন্দ্র সচিব বাটন ফোন ব্যবহার করতে পারেবেন।’
দীপু মনি বলেন, ‘এমনকি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট অন্য কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী ও গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই। ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশুনা না করে কোথায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে তা কেউ জানার চেষ্টা করবে না। আমরা ছাত্র-ছাত্রী অভিববাকদের কাছে এই আশা করি।’ তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অব্যশই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। যদি একান্ত কারও দেরি হয় তাহলে তা কেন্দ্র প্রধানের রেজিস্ট্রারে লিখে বোর্ডে পাঠাতে হবে। ২০১৮ সালে যেভাবে আমরা সফল হয়েছি সেই একইভাবে এবারও ইনশাল্লাহ আমরা সফল হবো। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’
সিন্ডিকেটভিত্তিক কেন্দ্র দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘যেহেতু গতবছর এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে ভাল পরীক্ষা হয়েছে। ফলে এবার ঢাকা বোর্ডের দৃষ্টি আকর্শন করছি। যেহেতু পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সব দায়িত্ব পালন করে বোর্ড, ফলে এ বিষয়গুলো মন্ত্রণালয়ের ওপর বর্তায় না। এটা বোর্ডকে দেখার অনুরোধ করবো। ফেসবুককেন্দ্রীক নানা গুজব তৈরি হয় তাই বিটিআরসির প্রতি আপনাদের কোনো নির্দেশনা আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তথ্যমন্ত্রণালয়ের বিশেষ সেল এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে তারা দায়িত্ব পালন করবে। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় আগে কোনো তদন্ত হয়নি এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এই তথ্যটি আমার কাছে নেই। আমি জানলে তা জানাবো।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল)। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এবারের এসএসসিতে তত্ত্বীয় পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি। তত্ত্বীয় পরীক্ষা দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমআই/টিআর