বাণিজ্যমেলায় বহুমুখী পাটপণ্যের বাহার, মুগ্ধ ক্রেতারা
২১ জানুয়ারি ২০১৯ ২২:০৯
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্যোক্তাদের তৈরি বহুমুখী পাটপণ্যের পসরা বসেছে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে (জেডিপিসি)। দুই শতাধিক পাটের পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে প্যাভিলিয়নটিতে। ঘরের আসবাব থেকে শুরু করে নারীর গয়না, হাতে তৈরি পাটের হ্যান্ড নোটবুক, মানিব্যাগ, কাঁধে ঝুলানো বাহারি ব্যাগ, পাপস, শিশুদের খেলনাসহ প্রায় সবকিছুরই দেখা মিলছে জেডিপিসিতে। ক্রেতারাও রীতিমতো মুগ্ধতা নিয়ে দেখছেন বহুমুখী পাটপণ্য। কেনাকাটাও করছেন অনেকে। যদিও বিক্রেতারা বলছেন, বাড়তি ক্রেতাতেও বিক্রি এখনও আশাপ্রদ নয়।
সোমবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে বাণিজ্যমেলার জেডিপিসির প্যাভিলিয়ন ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। মেলার মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করে বড় টাওয়ারটি হয়ে বাম দিকে এগুতে থাকলে পানির ফোয়ারার পাশেই জেডেপিসি প্যাভিলিয়ন। সেটিও সাজানো হয়েছে পাট দিয়েই।
জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) প্যাভিলিয়নে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির সেলস এক্সিকিউটিভ রোকসানা ইয়াসমিনের সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘অন্য বছরের চেয়ে মেলায় এবার পাটপণ্যের প্রতি সাড়া বেশি। বর্তমানে আড়াইশরও বেশি বহুমুখী পাটপণ্য রয়েছে। দেশের নানা স্থান থেকে আসা উদ্যোক্তারা তাদের পাটপণ্য জেডিপিসি’র প্যাভিলিয়নের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরছে।’
বেচাকেনা গত বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি বলে জানালেন কয়েকজন উদ্যোক্তা। হলি ক্রাফটস অ্যান্ড ফ্যাশনের সিইও কামাল হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্যাভিলিয়নটি এবার দর্শনার্থীদের চোখে পড়ছে। স্থানটিও ভালো। ফলে ক্রেতা সমাগম গত বছরের অনেক বেশি। এতে বেচাকেনাও কিছুটা বেড়েছে।’
স্টলভেদে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকার বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানান কামাল। প্রায় ৫০ ধরনের পণ্য তুলে ধরা স্টলটিতেও দেখা গেল ক্রেতাদের ভিড়।
রংপুরের ১৩ জন উদ্যোক্তার পণ্য তুলে ধরা হয়েছে প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশনের স্টলে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত একটি প্রকল্পের আওতায় রংপুর এলাকার ১৩ উদ্যোক্তাকে এ সু্যোগ দেওয়া হয়েছে। কথা হলে নীলমাধব নামক একটি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা কাকলি সরকার বলেন, ‘স্টলটিতে প্রায় শ’খানেক পণ্য তুলে ধরা হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার এই প্যাভিলিয়নে ক্রেতা অনেক বেশি, তবে সে তুলনায় বিক্রি কিছুটা কম।’
পাটের তৈরি ব্যাগ কেনার পর ধানমন্ডি থেক আসা সুইটি বলেন, ‘পাটের প্রতি একটা অন্য রকমের আগ্রহ রয়েছে। বাসায় হাউজহোল্ডের অনেক কিছুই এখন পাটের। ব্যাগটি পছন্দ হওয়ায় মেলা থেকেই কিনলাম।’
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সুমন পাটের তৈরি মানিব্যাগ দেখে চমকে উঠে বলেন, ‘পাট দিয়ে এত কিছু হয়!’ ফার্মগেটের বাসিন্দা জাফর বলেন, ‘বাড়ির জন্য কয়েকটি ব্যাগ কিনে নিলাম। দামেও সস্তা।’
বহুমুখী পাটপণ্যের স্টল প্রকৃতির কর্মচারী শুভ্র দাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাটের পণ্যের প্রতি অনেকের আগ্রহ আছে। কিন্তু কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের প্লাস্টিকের প্রতি ঝোঁক বেশি। তারপরও মোটামুটি বিক্রি হচ্ছে। স্টলটিতে ব্যতিক্রমের মধ্যে হাতে তৈরি পাটের নোটবুক প্রদর্শন করা হচ্ছে। দাম পড়বে ২০০ টাকার মতো। এছাড়াও হাউজহোল্ড ও নারীদের ব্যবহারের উপযোগী নানা ধরনের গহনাও রয়েছে। পাটের তৈরি রঙ-বেরঙের দড়িও রয়েছে আমাদের স্টলে।’
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে/টিআর