Tuesday 21 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভুয়া মালিক সেজে জমি বিক্রি, মূল প্রতারক গ্রেফতার


২১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:৪৬

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকায় সাড়ে ২৭ শতাংশ জমির ভুয়া মালিক সেজে বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মূল প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তার নাম জাহাঙ্গীর ফারুক (৬০)। এরই মধ্যে প্রতারণার কথা স্বীকার করে আদালতে ৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে সে।

সোমবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি সিরিয়াস ক্রাইম) নাজমুল হাসান সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় তুরাগ এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। আজ তাকে আদালতে তোলা হলে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন তিনি। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।’

সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসান বলেন, ‘হারুন অর রশীদ নামে একজন প্রতারকের বিরুদ্ধে রাজধানীর ফুলবাড়িয়া এলাকার একটি জমি ভুয়া মালিক সেজে বিক্রির ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অনেক দিন পর জামিনে মুক্তি পায়। আমাদের কাছে তথ্য আসে হারুন আবারও একই কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে তুরাগ এলাকার প্রিয়াঙ্কা গ্রুপের ফিল্ড অফিসার ইস্কান্দার মোল্লা নামে একজন অভিযোগ দেয় যে, একটি প্রতারক চক্র জমি বিক্রির কথা বলে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’

অভিযোগে বলা হয়, হুমায়ুন কবির নামে জমি ক্রয়-বিক্রয়কারী একজন মিডিয়াম্যান গত ১ জানুয়ারি প্রিয়াঙ্কা গ্রুপে এসে জানায়, তুরাগ বাউনিয়া মৌজাস্থ দাগ নং ৬৯০৫ এর ২৭.৫০ শতাংশ জমি বিক্রি হইবে। প্রিয়াংকা গ্রুপের মালিক সাইদুর রহমান হুমায়ুন কবিরকে জমির সব কাগজপত্র নিয়ে ৩ জানুয়ারি আসতে বলেন। কথামতো ৩ জানুয়ারি মিডিয়া ম্যান হুমায়ুন ও হারুন অর রশীদ নামে একজন জমির সব কাগজপত্রের ফটোকপিসহ সাইদুর রহমানের সাথে দেখা করেন। জমির দাম ৭১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ঠিক হলে ১০ লাখ টাকা বায়নাপত্র হয়। বায়নার ১০ লাখ টাকা ৯ জানুয়ারি দেওয়ার চুক্তি হয়। ৯ জানুয়ারি টাকা দেওয়ার দিনে হারুন অর রশীদ হাজির হয়ে বায়না নামার ১০ লাখ টাকা বুঝিয়ে নেন। একই দিনে জমির বায়না দলিল নং ১৫৮ মতে রেজিস্ট্রি করে নেন।

বিজ্ঞাপন

পরে ১৮ জানুয়ারি শাওন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে সাইদুর রহমান জানতে পারেন যে, জাহাঙ্গীর ফারুক নামের এক ব্যক্তি জমির মূল মালিক আব্দুল কাদেরের (শাওনের বাবা) নাম ধারণ করে হারুন অর রশীদকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়েছেন। সেই পাওয়ার অব এ্যাটর্নির ক্ষমতাবলে হারুন সাইদুর রহমানের সাথে বায়না চুক্তি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পরে সাইদুর রহমান হারুনের অফিসে গিয়ে জমির প্রকৃত মালিককে ডাকতে বলেন। হারুন ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রকৃত মালিককে নিয়ে হাজির হওয়ার কথা বলেন। কিন্তু ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হারুন আর না এসে হাজির হন জাহাঙ্গীর ফারুক নামে এক ব্যক্তি। যিনি মূল মালিক আব্দুল কাদের সেজে এসেছেন।

একই সময়ে শাওন তার বাবা (জমির মূল মালিক) আব্দুল কাদেরকে নিয়ে হাজির হন। তখন সাইদুর রহমান উভয়পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর ফারুক স্বীকার করেন, তিনি ওই জমির প্রকৃত মালিক নন। হারুনের বুদ্ধিতে ভুয়া জমির মালিক সেজে প্রতারণা করাই তাদের পেশা।

পুরো বিষয়টি প্রিয়াঙ্কা গ্রুপের মালিক সাইদুর রহমান সিরিয়াস ক্রাইমকে জানালে তদন্তে নামে ডিবি পুলিশ। তদন্তে প্রতারণার তথ্যের সত্যতা পাওয়ায় ১৯ জানুয়ারি রাতে তুরাগ এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। হারুন পালিয়ে যায়। এ ঘটনা তদন্তে জামান মাস্টার নামে আরও একজনের সত্যতা পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় একটি মামলা হয়। যাতে আসামি করা হয় তিনজনকে। হারুন অর রশীদ, জাহাঙ্গীর ফারুক ও জামান মাস্টার। তদন্তে মাহবুবুর রহমান রুবেল নামে একজন আইনজীবীকে আটক করা হলেও তার জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসান বলেন, ‘গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি ক্ষমতা সম্পন্ন পাওয়ার অব অ্যাটর্নি যাহার দলিল নং ৬১৫৬ তারিখ ১৫/১০/১৮ ইং জব্দ করা হয়।’

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

বিজ্ঞাপন

সেই হাথুরুসিংহকে দুষলেন আফিফ
২১ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:১৬

আরো

সম্পর্কিত খবর