Thursday 24 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বনের রাজা’ ওসমান গনির সাজা আপিলেও বহাল


২২ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:০৩ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ১৩:০৭

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বনের রাজা খ্যাত চাকরিচ্যুত প্রধান বন সংরক্ষক ওসমান গনিকে হাইকোর্টের দেওয়া ১২ বছরের কারাদণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ইমান আলীর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন।

এর আগে  ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর ওসমান গণিকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১২ বছরের সাজা বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে  আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন ওসমান গনি।

এ মামলার লিভ টু আপলি শুনানিতে  ওসমান গণির পক্ষে আইনজীবী  এ এম আমিন উদ্দিন ও  দুদকের পক্ষে মো. খুরশিদ আলম খান অংশ নেন।

পরে আইনজীবী খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আসামি ওসমান গণির করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে বিশেষ আদালতের দেওয়া রায় বহাল রইল আপিল বিভাগেও।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৫ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ওসমান গণিকে দোষী সাব্যস্ত করে ১২ বছর ও তাঁর স্ত্রী মোহসিনারা গনিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন। একই সঙ্গে আদালত ওসমান গনির নামে থাকা এক কোটি ৮০ লাখ ও স্ত্রীর নামে থাকা দুই কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ২৭০ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করেন।

এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে এবং আজ আপিল বিভাগ তার সাজা বহাল রাখেন।

ওসমান গনির উত্তরার সরকারি বাসভবনে অভিযান চালিয়ে চালের ড্রাম, বালিশ ও তোশকের ভেতর থেকে এক কোটি ছয় লাখ ৮৪ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তারা ৪১ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্রের সন্ধানও পায়। এরপরই ওসমান গনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় ওই বাসা থেকে ওসমান গনির নামে দুটি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একটি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার লকার থেকে ২৯০ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে মাত্র ২০ ভরি অলংকারের বৈধ কাগজপত্র ছিল।

বিজ্ঞাপন

এরি ধারাবািহিকতায়, ২০০৭ সালের ১৬ জুন ওসমান গনিকে তাঁর সম্পত্তির হিসাব জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ দেয় দুদক। ওসমান গনি ২৬ জুলাই তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব জমা দেন। বিবরণীতে তিনি স্ত্রী মোহসিনারা ও তাঁর নামে তিন কোটি ৭০ লাখ ১৫ হাজার টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদসহ ২৯০ ভরি স্বর্ণালংকার আছে বলে উল্লেখ করেন। এর মধ্যে তাঁর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ৪৩ লাখ ৪৩ হাজার ৪০৬ টাকার এফডিআরসহ (স্থায়ী আমানত) মোট এক কোটি ৫৬ লাখ ৭৬ হাজার ১৯১ টাকা জমা ছিল। বাসায় আসবাবপত্র দেখানো হয়েছে চার লাখ ৫৫ হাজার ৪০০ টাকার। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মূল্য দেখানো হয় সাত লাখ পাঁচ হাজার ৬০০ টাকা।

স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে দেখিয়েছেন জিগাতলা মনেশ্বর রোডের ৯৬ /২ /বি নম্বরে একটি পাঁচতলা বাড়ি। দুদকের মূল্যায়নে ওই বাড়িটির মূল্য এক কোটি এক লাখ ৬৭ হাজার ৭৯৩ টাকা। চার কাঠা পরিমাণের এই জমির ক্রয়মূল্য ছিল এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া তার স্ত্রীর নামে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের সাত নম্বর সড়কে পাঁচ কাঠা জমির একটি প্লট, নিজের নামে পূর্বাচল ২ নম্বর সেক্টরের ১০২ নম্বর সড়কে সাড়ে সাত কাঠার ১২৯ নম্বর প্লট, যার মূল্য ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা, বরিশালের আলেকান্দায় ছয় শতাংশ জমি, মূল্য তিন লাখ টাকা দেখানো হয়। বিবরণীতে বলা হয়, তিনি ও তাঁর স্ত্রী ১৯ লাখ ৩০ হাজার ৫২৭ টাকার সম্পদের আয়কর দিয়েছেন।

দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, ওসমান গনি এক কোটি দুই লাখ ৫৩ হাজার ৫৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তাঁর জ্ঞাত আয়বহিভূর্ত সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ৯৬ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৪ টাকা।

২০০৭ সালের ২৬ জুলাই ওসমান গনি ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে উত্তরা থানায় মামলা করে দুদক। ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক আখতার হামিদ ভূঁইয়া । আদালত এ মামলায় ৫১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেডকে/জেডএফ 

আপিলে ওসমান গনির সাজা বহাল ওসমান গনি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর