Thursday 03 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভালো শিক্ষকের গুণ পড়ানো, রাজনীতি করা নয়


২২ জানুয়ারি ২০১৯ ১৬:৫৪ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:০০
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাবি: ভালো শিক্ষকের গুণ পড়ানো, বক্তৃতা দেওয়া বা রাজনীতি করা নয়। কিছু শিক্ষক ছাত্রদের বিরুদ্ধে স্বার্থবাদী কাজ করেন। এর জন্য আমাদের (শিক্ষকদের) মাথা নিচু হয়ে যায়। মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানবন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসব কথা বলেন।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের ছাত্র তাইফুর রহমান প্রতীকের আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের বিচারের দাবি করা হয় এই মানববন্ধন।

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন,  ‘কিছু শিক্ষক আছে যারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে স্বার্থবাদী কাজ করেন। ফলে আমাদের শিক্ষকদের মাথা নিচু হয়ে যায়। সম্প্রতি শাবিপ্রবির ঘটনায় খোঁজ নিয়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। কিন্তু এই ঘটনাটি যদি আংশিক সত্য হয় তবে শিক্ষক নামের কেউ এই পদে থাকতে পারেন না। এজন্য তাদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীরা কেন আত্মহত্যা করে তা খোঁজ নিয়ে তার সমাধান হওয়া চাই।’

বিজ্ঞাপন

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন,  ‘ভাল শিক্ষকের গুণ পড়ানো, বক্তৃতা দেওয়া বা রাজনীতি করা নয়। ভাল শিক্ষকের গুণ শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা। সেই বিচারে শাবির এইসব শিক্ষক আমার কাছে শূন্য নম্বর পেয়েছেন। তারা ক্লাসে ভালো পড়াতে পারেন, রাজনীতি করতে পারেন কিন্তু ছাত্রদের ভালোবাসতে পারেননি।’ বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি, এলাকাপ্রীতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হয় বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন,  ‘এর জন্যে ভাল শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব খাটাতে পারে না। ফলে নানা ঝামেলা হয়। জ্ঞানের চর্চা হয় না।’ এ ছাড়া তিনি প্রতীকের ঘটনায় জড়িত শিক্ষক আজাদসহ অন্যান্যদের বিচারের দাবি জানান।

স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন প্রয়োজন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে এই ধরণের ঘটনার বারবার অভিযোগ ওঠে। এর কারণ ব্যক্তিস্বার্থবাদী, রাজনৈতিক প্রভাবশালী শিক্ষকদের চক্রান্তের মেধাবী শিক্ষার্থীরা বলি হয়।’ তিনি এই ঘটনাকে আত্মহত্যা নয় হত্যা বলে অভিযোগ করেন।

মানববন্ধনে শাবিপ্রবির ছাত্র তাইফুর রহমান প্রতিকের আত্মহত্যার কারণ দ্রুত খুঁজে বের করতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা। তারা শাবিপ্রবির অধ্যাপক আজাদসহ জড়িত অন্যান্য শিক্ষকদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধাবী শিক্ষার্থী যারা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয় তাদের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ারও দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে অধিকাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন প্লাকার্ড ধারণ করেন। সেগুলোতে লেখা ছিল- ‘প্রতীকের মৃত্যু আত্মহত্যা না হত্যা?’, ‘আত্মহত্যা বন্ধ হোক’, ‘প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়ার সত্বেও প্রতীক কেন থিসিস করার সুযোগ পেল না’, ‘আত্মহত্যা প্ররোচনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’, ‘শিক্ষাঙ্গণে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক স্বাভাবিক হোক’ ইত্যাদি।

মানববন্ধনে যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ, সিন্ডিকেট সদস্য ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হুমায়ন কবির, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক তাজিন আজিজ, ভাষাবিজ্ঞানের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. সালমা নাসরীন, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/কেকে/এমআই

মানববন্ধন শাবিপ্রবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর