‘প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষকরা ফেল করিয়ে দেন’
২৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:২১
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষকরা কখনও কখনও শিক্ষার্থীদের ফেল করিয়ে দেন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি।
মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম কলেজ মিলনায়তনে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে করণীয় নির্ধারণ করতে এই মতবিনিময় সভায় বসেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মণি এবং উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এসময় মন্ত্রী বলেন, অনেক শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করিয়ে শিক্ষার্থীদের নিজেদের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন। না পড়লে কখনও কখনও শিক্ষার্থীদের ফেল করিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এ ধরনের অনৈতিক বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রসঙ্গে দীপু মণি বলেন, ব্যবস্থা নেওয়ায় গতবার কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। এ বছরও যেন প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয়, সেজন্য জোরদার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তীক্ষ্ণ গোয়েন্দা নজরদারি আছে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক— সবার ভূমিকা রয়েছে।
‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে কারা কারা বা কোন কোন পক্ষ জড়িত তা জেনে লজ্জায় পড়তে হয়। পরীক্ষার প্রস্তুতি বাদ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন খুঁজছে। অভিভাবকেরা টাকা জোগাড় করে প্রশ্নপত্র পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। আবার পরীক্ষার শুরুর আগ মুহূর্তে কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। এসব দুঃখজনক ও লজ্জাজনক,’— বলেন মন্ত্রী।
সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, শিক্ষা খাতে কোনো ধরনের অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকলে কেউ কোনো ছাড় পাবেন না। যতটুকু কঠোর হতে হয়, ততটুকু কঠোর হবেন তারা। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নানা উপায়ে নানাভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা কোচিং বাণিজ্যে যুক্ত আছেন।
শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য পৃথিবীর সব দেশেই হয় উল্লেখ করে উপমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। তবে নিয়ম মেনে চলতে হবে। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে পাঠদানে বাধ্য করলে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় শিক্ষকেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল সংকট, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব, বেতন-ভাতার সমতাকরণসহ বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান শাহেদা ইসলাম, মাউশির চট্টগ্রামের পরিচালক প্রদীপ চক্রবর্তী এবং চট্টগ্রাম সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল হাসান।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর