নদীতে পানি নেই, শঙ্কায় সিরাজগঞ্জের কৃষকরা
২৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৯:৫৩
।। রানা আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
সিরাজগঞ্জ: কালো জলের যমুনা এবং এর শাখা নদীগুলো পানিশূন্য হয়ে এখন মৃতপ্রায়। এতে ফসল নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলার কৃষকরা। নদীগুলোর বুকজুড়ে এখন শুধুই ধূ ধূ বালুচর। নদীর বুকেই কোথাও হচ্ছে চাষাবাদ, কোথাও দূরন্ত কিশোররা ক্রিকেট বা ফুটবল খেলছে।
বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর ওপর দাঁড়ালেই শাখা নদীগুলোর অবস্থা আঁচ করা যায়। সেতুর দক্ষিণ দিকের ৫ নম্বর পিলার থেকে ২৩ নম্বর পিলার পর্যন্ত এবং উত্তর দিকের ৬ নম্বর পিলার থেকে ১৭ নম্বর পিলার পর্যন্ত প্রকাণ্ড চর জেগে উঠেছে যমুনার বুকে। সেখানেই অনেকে করছেন চাষাবাদ। কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, চরাঞ্চলের প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পলি ও দো-আঁশ মাটিতে গম, বাদাম, মিষ্টি আলু, সবজিসহ বিভিন্ন জাতের ফসল আবাদ হচ্ছে। তবে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে নদীর মাঝখানে প্রকাণ্ড চর জেগে ওঠায় দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এক সময় বাহিরকোলা নৌবন্দর, যমুনা নদীর ভূয়াপুর-জগন্নাথগঞ্জ ঘাট, সিরাজগঞ্জ পুরাতন জেলখানা ঘাট, কাজীপুর ঘাটে বড় বড় স্টিমার-লঞ্চ আসত- সেটা এখন শুধুই গল্প। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই এখন নাব্যতা সংকটে পড়ে এই জেলার অধিকাংশ নদী। ফলে নদী ঘেঁষে থাকা কৃষি জমিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। বেড়েছে সেচ খরচ। সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর চরাঞ্চলের কৃষকরা ধানের সেচ নিয়ে এখন থেকেই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মতে, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং ও নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে এই বিপত্তি।
সিরাজগঞ্জ স্বার্থসংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ডা. জহুরুল হক রাজা জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার উন্নয়ন করতে কৃষিখাতকে প্রাধান্য দিতে হবে। কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, নদী খনন, সার-বীজ-সেচ ব্যবস্থা সহজ লভ্য করতে হবে। যমুনার শাখা নদীগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ খনন করা হয় না, এসব নদী খননের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেওয়ার পরও নদীর জমি অবৈধ দখলদার থেকে উদ্ধার করতে উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সারাবাংলা/এটি