শিশু ও নারী সচেতনতায় ইউনিসেফ’র ১৪০ কোটি টাকা
২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৯:৪৪
জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
শিশু ও নারী উন্নয়নে সহায়তা বাড়াচ্ছে ইউনিসেফ। এ জন্য দেশের ৬৪ জেলায় সম্প্রসারণ করা হচ্ছে সচেতনতামূলক যোগাযোগ কার্যক্রম। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। ‘শিশু ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক যোগাযোগ কার্যক্রম (পঞ্চম পর্যায়)’ নামের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং ইউনিসেফের অনুদান থেকে ৮৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে তথ্য মন্ত্রণালয়।
ইআরডি ও পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানাগেছে।
প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে তথ্য মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকটি সংস্থা। এগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইউনিসেফ এর আগে চতুর্থ পর্যায় পর্যন্ত নারী ও শিশু উন্নয়ন কার্যক্রমে সহায়তা দিয়েছে। এবারও অনুদান সহায়তা বিষয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। তাদের অনুদানের সঙ্গে সরকারের নিজস্ব তহবিলের অর্থ যোগ করে যৌথভাবে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।’
তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় এবং ইউনিসেফ ১৯৯৬ সাল থেকে শিশু ও নারী উন্নয়নে যোগাযোগ কার্যক্রম প্রকল্পের চারটি পর্যায় বাস্তবায়ন করেছে। প্রথমে ১৯৯৬ সালের ১ জুলাই থেকে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয় এবং চতুর্থ পর্যায় প্রকল্পটি চলতি বছরের ৩০ জুনে সমাপ্ত হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ৮টি গণমাধ্যম সংস্থা সংশ্লিষ্ট।
ইউনিসেফ প্রকল্পে আর্থিক ও কারিগরী সহায়তা দেয় এবং সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দের মাধ্যমে সরকার অর্থায়ন করে।প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিশু অধিকার, নারী অধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থের উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমানো, শিশু বিবাহ রোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ, নিরাপদ মাতৃত্ব, মাতৃদুগ্ধ পান, পুষ্টি, টিকা, গর্ভকালীন মায়ের যতœ, নবজাতক শিশুর পরিচর্যা, শিশু ও নারী পাচঁর রোধ, শিশু শ্রম নিষিদ্ধকরণ, যৌতুক বন্ধ, মাদক ও চোরাচালান কাজে শিশু ও নারীদের ব্যবহার না করা ইত্যাদি বিষয়ে শিশু অধিকার সনদ (সিআরসি) এবং নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ (সিডো) এবং নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা।
এই প্রচারের মাধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের মধ্যে উল্লিখিত বিষয়গুলোতে সচেতনতা সৃষ্টি এবং মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন করা।প্রকল্পের আওতায় ধারাবাহিকভাবে চারটি পর্যায় বাস্তবায়ন তথা শিশু ও নারীদের সামগ্রিক বিষয়ে ইতিবাচক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে ইউনিসেফ পঞ্চম পর্যায়ে চার বছর মেয়াদে কার্যক্রমে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সহায়তা দিচ্ছে। তাই ভিশন-২০২১ লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন খুবই ঘনিষ্টভাবে সংশ্লিষ্ট। এজন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে শিশু ও নারীদের সার্বজনিন অধিকার সমুন্নত রাখা এবং সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের স্বপক্ষে জনমত গড়ে তোলা, নারীর ক্ষমতায়নকে উৎসাহিত করার জন্য গণমাধ্যম যোগাযোগ কার্যক্রম কৌশল প্রণয়ন করা, শিশু ও নারীদের অধিকার ও অবস্থা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যম যেমন, সামাজিক, ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, পল্লী সঙ্গীত ইত্যাদির মাধ্যমে বার্তা প্রচার করা হবে। তাই ইতিমধ্যেই প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ শেষ করা হয়েছে। এটি অনুমোদনের জন্য আগামী একনেক বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে।
সারাবাংলা ১৫৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৭
জেজে/সুমন