Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এক বছরে ঢাবিতে চুরি-ছিনতাই অর্ধশতাধিক, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা!


২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৩

।। কবির কানন, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা। এ মাসেই ক্যাম্পাস এলকায় চারটি ছিনতাই এবং হলে দুটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। আর যে কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাস দিলেও এতে কোনো সমাধান মিলছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ফয়সল সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, গত ২২ ‍ডিসেম্বর রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটিতে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে রিকশা করে হলে যাচ্ছিলাম। দোয়েল চত্বর এলাকায় হঠাৎ আমার রিকশার সামনে একটা সাদা প্রাইভেটকার এসে গতিরোধ করে। ঘটনা বুঝতে পেরে আমি রিকশা থেকে নেমে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ছিনতাইকারীরা পেছন থেকে গুলি করবে বললে ভয়ে রাস্তায় পড়ে যান। ছিনতাইকারীরা পিস্তল ও রামদা নিয়ে ঘিরে ধরে তার মোবাইল, মানিব্যাগসহ গুরুত্বপূর্ণ সব জিনিস নিয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট থানা, ভুক্তভোগী ও সংবাদপত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অর্ধশতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২২ জানুয়ারি রাতে কলাভবনের সামনে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান। এর আগে ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল থেকে একটি বাইক চুরি যায়। ৯ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ড. মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ হলের মেইন ভবনের ২১৮ কক্ষের তালা পেরেক দিয়ে খুলে দুটো ল্যাপটপ চুরি করে নিয়ে যায় চোর। এ ঘটনার কয়েকদিন রাত সাড়ে ন’টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম ও ‍বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সংলগ্ন পলাশী মার্কেট থেকে বিকাশে টাকা তুলে হলে ফেরার সময় স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যের কাছে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতের শিকার হন আগে জগন্নাথ হলের আবাসিক ছাত্র অনুপ কুমার।

বিজ্ঞাপন

গত এক বছর ধরে প্রায় একই কায়দায় অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন। এসব ঘটনার পরপরই কিছুদিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন তাদের তৎপরতা দেখালেও আবার তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এলাকায় অহরহ এমন ছিনতাইয়ের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, নিজ ক্যাম্পাসে যদি জানমালের নিরাপত্তা না থাকে তাহলে আর কোথায় নিরাপত্তা পাব? এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা কখনও থানায় অভিযোগ করেন আবার অনেকেই এসব করে কোনো লাভ হয় না বলে জানিয়ে এড়িয়ে যান।

সম্প্রতি কার্জন হল সংলগ্ন তিন নেতার মাজারের কাছে ছিনতাইয়ের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রী। এই প্রতিবেদক তাকে থানায় জানানোর পরামর্শ দিলে তিনি বলেন, ‘থানায় অভিযোগ করলে আমার হারানো জিনিসতো ফিরে পাবো না। শুধুই ঝামেলা, এজন্য থানায় জানাবো না।’

চুরি ছিনতাইয়ে প্রশাসনের কোনো ভ্রক্ষেপ নেই অভিযোগ করেন কায়েস নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্র। আলতাফ হেসেন নামের এক ছাত্র ক্যাম্পাসে বহিরাগতরাই এসব করেন অভিযোগ করে এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আইন শৃঙ্খলার দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী সারাবাংলাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের মানুষের অবাধ বিচরণ। এ অবস্থায় সকলের দায়িত্ব সহযোগিতা করা। বিষয়টি নিয়ে আমরা দেখছি। ছাত্র ও শিক্ষকদের নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার সেই প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলক্ষেত ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) সাহেব আলী বলেন, ক্যাম্পাসে এতো পরিমাণে লোক। কে ছাত্র, কে বহিরাগত? চিহ্নিত করা কঠিন। তারপরও ছিনতাইকারীদের ধরতে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব ঘটনা আমাদের জানায় না। আমরা যেগুলো জানতে পারি সেগুলোর মামলা নেই।

সারাবাংলা/কেকে/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর