বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে হাটিকুমরুল সড়কের কাজ শিগগিরই
২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ১৬:২৬
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চার লেনে উন্নীত হচ্ছে ১৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক। শিগগিরই কাজ শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সড়কের।
দ্বিতীয় সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবি’র আর্থিক সহযোগিতায় এ কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। নির্মাণকাজ শুরু করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এরই মধ্যে চারটি প্যাকেজের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে ৬ নম্বর প্যাকেজের। এর মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমুরুল পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার চার লেন সড়ক পথ। এতে সাতটি সেতু, ১৭টি কালভার্ট, একটি ফ্লাইওভার ও পাঁচটি আন্ডারপাস, ১২টি বাস বে একটি ফুটওভার ব্রিজ ও ছয়টি ইন্টারসেকশন থাকবে।
এ অংশ ৬৭৫ কোটি টাকার চুক্তিমূল্যে কাজ যৌথভাবে করবে হুগো চায়না ও মীর আক্তার কনস্ট্রাকশন। তিন বছরে শেষ হবে নির্মাণ কাজ। একবছর ‘ডিফেক্ট লাইবেলিটি পিরিয়ড’। এরপর আরও ৫ বছর সড়কটি মেরামতে থাকবে তারা। সব মিলিয়ে ১০ বছরে সড়কের দায়িত্বে থাকবে হুগো চায়না ও মীর আক্তার কনস্ট্রাকশন।
এর আগে এ প্রকল্পের আরো তিনটি প্যাকেজ এর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এগুলো হলো হাটিকুমরুল থেকে মির্জাপুর ২৮ কিলোমিটার, মির্জাপুর থেকে বনানী (বগুড়া) ২২ কিলোমিটার, বনানী (বগুড়া) থেকে মোকামতলা ২৫ কিলোমিটার।
সাসেক প্রকল্পের অধীনে ঢাকা থেকে বগুড়ার দূরত্ব ১৯০ কিলোমিটার এবং ঢাকা থেকে রংপুরের দূরত্ব ৩০৭ কিলোমিটার।
এ মহাসড়ক বর্তমান নক্সায় উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে ৪১১ মিটারের একটি রেলওয়ে ওভারপাস, ৩২টি ব্রিজ, ১১টি পথচারী ওভারপাস, ৩৯টি আন্ডারপাস, একটি ইন্টারচেঞ্জ নির্মিত হবে। এর বাইরে দীর্ঘ এই সড়কে ৮০টি পয়েন্টে উন্নত দেশগুলোর মতো আধুনিক ‘বাস-বে’ স্থাপিত হবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর জানায়, সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে বগুড়া হয়ে রংপুর এবং সাসেক তৃতীয় পর্বের মাধ্যমে রংপুর থেকে বুড়িমারী অথবা পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা পর্যন্ত মহাসড়ক সম্প্রসারিত হবে। এর মাধ্যমে বাংলাবান্ধা দিয়ে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে উপ-আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ সহজতর করা হবে।
এরই মধ্যে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশনে যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে। চার দেশের মধ্যে যান চলাচল চুক্তিও হয়েছে। শিগগিরই সড়ক পথে যান চলাচল শুরু হবে।
১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাবান্ধা ট্রানজিট পয়েন্ট চালু হয়। গত বছর (২০১৭) নবেম্বর মাসে ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাবান্ধায় ইমিগ্রেশন চালু হয়।
ইতোমধ্যে সাসেক মহাসড়কের ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল, বগুড়া, রংপুর বাংলাবান্ধা হয়ে ভারতের ফুলবাড়ি পানিরট্যাংক দিয়ে নেপালের কাঁকরভিটা হয়ে কাঠম-ু পর্যন্ত রুট তৈরি করা হয়েছে। গত বছর ঢাকা থেকে রংপুর হয়ে বাংলাবান্দা সীমান্ত দিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে কাঠমান্ডু পযন্ত সড়কপথে বাসের ট্রায়াল রান হয়েছেন।
বাংলাবান্ধা থেকে ভারতের শিলিগুড়ির দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। এই শিলিগুড়ি হয়ে নাগরকাতা দিয়ে ভুটানে প্রবেশ করা যায়। আবার শিলিগুড়ি থেকে সড়ক, রেল ও আকাশ পথে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া যায়।
সাসেক ২ এর প্যাকেজ-৬ চুক্তি স্বাক্ষর
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকামরুল পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সড়কের চুক্তি স্বাক্ষর বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) হয়েছে।
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পার্কাশ, প্রকল্প পরিচালক কাজী শাহরিয়ার হোসেন, সহকারী প্রকল্প পরিচালক পার্থ দাস গুপ্তসহ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসএ/একে