যাত্রী পাচ্ছেন না সেই শাহনাজ!
২৬ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:৫০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘আজ সাড়ে ১২টার দিকে বের হয়েছি। দুইটা কল পেয়েছি, কিন্তু কথা বলে কেটে দিলো, ক্যান্সেল করে দিলো। গত পরশু আড়াইটার দিকে বেরুলাম। রাত পর্যন্ত ৬টা কল পেলাম। সবাই জিজ্ঞেস করলো, আপনি শাহনাজ আপু? জি, বলছি বলে জানালে উত্তর এলো, আচ্ছা যাবো না। তারপর রিকোয়েস্ট ক্যান্সেল করে দিলো। এভাবেই চলছে গত দুই দিন ধরে, বলেন সেই শাহনাজ আক্তার। শনিবার (২৬ জানুয়ারি) সারাবাংলার এ প্রতিবেদককে ফোন করে দুদিন ধরে যাত্রী না পাওয়ার কথা জানালেন শাহনাজ আক্তার।
এই রাইডার বলেন, ‘অনেক কল আসে রাইডের জন্য, কিন্তু কথা বলে কেউ আর রাইড নেয় না।’ আর এটা কেন হচ্ছে, তা নিয়েও চিন্তিত তিনি। বলেন, ‘হয়তো সবাই ভাবছে আবার কোন ঝামেলা হয়। এ ভাবনা থেকেই হয়তো কেউ তার বাইকে উঠছে না।’
আরও পড়ুন: শাহনাজের বাইক ছিনতাই: আসামি জনি ২ দিনের রিমান্ডে
শাহনাজ বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে তো আমি আমার দুই মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো না। আমি তো কারও কাছে হাত পাতি নাই, কারও কাছে দশ টাকা সাহায্য চাই নাই। এমনকি বাইক হারানোর পর অনেকেই নতুন বাইক কিনে দিতে চেয়েছিলেন, আমি সেই নতুন বাইকও চাই নাই। আমি ধার করে কেনা আমার পুরনো বাইকটাই চেয়েছিলাম। কাজ করে খাচ্ছিলাম, এখনো কাজই চাই। কিন্তু বাইক না চালালে দুই মেয়ে আর মাকে নিয়ে চলবো কেমন করে? মেয়েদের লেখাপড়া করাবো কীভাবে? আমার একটা চাকরির ব্যবস্থা যদি কোনোভাবে হতো, তাহলে মেয়ে দুটোকে লেখাপড়া করাতে পারতাম, আমার মতো কষ্ট যেন ওদের না করতে হয়, সেজন্যই আমার কষ্ট করা। কিন্তু আমার বাইকেও তো কেউ উঠতে চাচ্ছে না। কী করবো আমি?’
এভাবে চলতে থাকলে মেয়েদের স্বপ্নপূরণ দূরের কথা, তাদের নিয়ে বেঁচে থাকাই কঠিন হবে আশঙ্কা প্রকাশ করে শাহনাজ বলেন, ‘আমার জন্য কেউ যদি একটা স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দিতেন, তাহলে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকতে পারতাম।’
উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে শাহনাজের মাহিন্দ্রা ব্র্যান্ডের নীল রঙের স্কুটিটি অভিনব কৌশলে ছিনতাই হয় রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানার খামারবাড়ি এলাকা থেকে। এরপর মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে স্কুটিটি উদ্ধার করে পুলিশ।
সারাবাংলা/জেএ/এমএনএইচ