হল ক্যান্টিন ছাড়া দোকানে ভারি খাবার বিক্রি মানা, ছাত্রদের ক্ষোভ
২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ১৩:১৫
।। কবির কানন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাবি: ক্যান্টিন মালিককে খুশি রাখতে ছাত্রদের হল ক্যান্টিনের বাইরে খাওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কর্তৃপক্ষের এমন অছাত্রসুলভ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হলের আবসিক শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, মুহসীন হলের ভেতরে ১০টি দোকান রয়েছে। এসব দোকানে ছাত্ররা সকাল বিকেল রুটি, সবজি, নুডলস ও কলার মতো হালকা খাবার খায়। কিন্তু এসব দোকানে রুটি, সবজি বিক্রির ফলে রাতের বেলা ক্যান্টিনে মালিক বাতেনের ক্যান্টিনের ব্যবসা কিছুটা কম হচ্ছে। এতে ক্যান্টিন মালিক প্রভোস্টের কাছে নালিশ করেছেন। আর তাতেই হল প্রভোস্ট কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে পাঠিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওইসব দোকানে রুটি বিক্রি করলে সেগুলো সিলগালা করে দেওয়ার।
সরেজমিনে দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রদের দাবিতেই তারা রুটি সবজি বিক্রি করতো। কিন্তু গতকাল ২৭ জানুয়ারি, রোববার হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ গিয়ে রুটি বিক্রি করতে নিষেধ করেন। তাছাড়া ছাত্রলীগ নেতারাও তাদের রুটি বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। রুটি বিক্রি করা হলে দোকান সিলগালা করার হুমকিও দেন ওই আবাসিক শিক্ষক। এর আগে এসব দোকানে ভাত বিক্রি করা হত। কিন্তু ক্যান্টিন মালিকের নালিশের মুখে হল দোকানগুলোতে ভাত বিক্রি করতে নিষেধ করে হল কর্তৃপক্ষ। চিকেন নুডলস বিক্রি করার ফলেও ক্যান্টিন মালিকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল বলে কর্তৃপক্ষ এসব দোকানে চিকেন নুডুলস বিক্রি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
ছাত্ররা সারাবাংলার কাছে অভিযোগ করেন, মুহসীন হলে প্রায় দুই হাজার ছাত্র থাকে। অথচ ক্যান্টিন একটি। সেই ক্যান্টিনের খাবারের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। বিভিন্ন সময় ভাত না খেয়ে তারা ওই দোকানগুলো থেকে রুটি-সবজি খান। কিন্তু ক্যান্টিন মালিকের আবদার রক্ষা করতে গিয়ে হল কতৃপক্ষ ছাত্রদের খাওয়ার জায়গা বন্ধ করে দিচ্ছেন।
নাঈম রহমান নামে হলের একজন আবসিক ছাত্র বলেন, হলের ক্যান্টিনে খাওয়া যায় না (মান খারাপ)। হল কর্তৃপক্ষ সেটা না দেখে বরং তাদের কথা মতো দোকানগুলোতে রুটি-সবজি বিক্রি করা নিষেধ করছে। হল কর্তৃপক্ষে এমন সিদ্ধান্তে আমি মর্মাহত। ছাত্রদের থেকে ক্যান্টিন মালিক বড় হয়ে গেল?
এদিকে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিও হল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে। সারাবাংলাকে তিনি জানান, ক্যান্টিনেই রুটি-সবজি পাওয়া যাবে।
এবিষয়ে ক্যান্টিন ম্যানেজার আলমগীর সারাবংলাকে বলেন, ক্যান্টিনে ৪০জন স্টাফ কাজ করে। বাইরে রুটি বিক্রি করার ফলে তাদের ব্যবসা কম হচ্ছে উল্লেখ বলেন, আমরাই এখন থেকে রাতে ভাতের সঙ্গে সবজি, রুটিও বিক্রি করব।
এ বিষয়ে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নিজামুল হক ভুইয়া বলেন দোকানদার রাত সাড়ে দশটার পরে করুক। কিন্তু তারা সকাল আটটা থেকে আরম্ভ করে। কোনোভাবেই তিনি এগুলো প্রশ্রয় দিবেন না বলে মন্তব্য করে।
সারাবাংলা/কেকে/এমআই