Monday 07 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যে উচ্চহারে কর আরোপের সুপারিশ


২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:৫৮ | আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১৬:১৮
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য হিসেবে জর্দা, গুল ও সাদাপাতার মতো চিবিয়ে খাওয়া তামাকপণ্য কোম্পানিকগুলোকে জাতীয় রাজস্ববোর্ডের তালিকাভুক্ত করে উচ্চহারে কর আরোপের সুপারিশ জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া ধোঁয়াবিহীন তামাক কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হোক’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সহজ ও শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতি প্রণয়নের কথা বলেছেন।  কারণ তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধি তামাক নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর একটি পদ্ধতি। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা দিনদিন বেড়ে চলছে, সেই সঙ্গে তামাকপণ্যের ছোট ছোট অবৈধ কোম্পানি ও ব্র্যান্ডের সংখ্যাও বেড়ে চলছে। তাই অতিসত্ত্বর ধোঁয়াবিহীন তামাক কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিবন্ধনহীন ধোঁয়াবিহীন তামাক কোম্পানিগুলোকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তালিকাভুক্ত করা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২০ দশমিক ৬ ভাগ মানুষ ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য (জর্দ্দা, গুল ও সাদাপাতা) ব্যবহার করে। যার ফলে তামাক সেবনে সৃষ্ট রোগ যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসে মৃত্যুর হার এসে দাঁড়িয়েছে ৬৭ শতাংশে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে তামাক নিয়ন্ত্রের অগ্রগতিতে পিছিয়ে রয়েছে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ধোঁয়াবিহীন তামাকদ্রব্যের মূল ভোক্তা হচ্ছে নিম্ন আয়ের শ্রমিক, দিনমজুর শ্রেণির পুরুষ ও নারী। গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৬৫ ভাগ দরিদ্র মানুষ আরও দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যয় করে যার অন্যতম কারণ হচ্ছে তামাকজাত দ্রব্যের  অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার।

এসময় বক্তারা ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যে আইন বাস্তবায়নের বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতাও উল্লেখ করেন। যেমন সমাজে বিড়ি-সিগারেটের পারিবারিক গ্রহণযোগ্যতা না থাকলেও জর্দ্দা-গুল জাতীয় তামাক পণ্য ব্যবহারে এটি অনেক শিথিল। তাছাড়া বর্তমানে যে করনীতি আছে সেটি যথেষ্ট দুর্বল, এর পাশাপাশি আইন বাস্তবায়নে অবহেলা ও দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থাপনাও অন্যতম একটি কারণ। এছাড়া অধিকাংশ ধোঁয়াবিহীন তামাক কোম্পানিগুলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তালিকাভুক্ত নয় বলে এসব কোম্পানিগুলোকে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা ও আইন প্রণয়ন করাও সম্ভব হয় না।

এসময় বক্তারা বিশ্বের অন্যান্য দেশে তামাকজাত দ্রব্যের প্রকৃত মূল্য বাড়িয়ে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণনকে ইঙ্গিত করে বলেন, বাংলাদেশকেও এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে পুরো কর ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণের পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা সৃষ্টি ও কর আদায়ের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধির দিকেও নজর দিতে বলেন বক্তারা।

সবশেষে তামাক নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক আশাবাদ ব্যক্ত ও তামাকের কর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, আশার কথা হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রত্যয়ী এবং এর পাশাপাশি গণমাধ্যমের প্রচেষ্টায় সাধারণ জনগণ ও নীতি নির্ধারকদের মধ্যে একটি তামাকবিরোধী সচেতনতার জায়গা সৃষ্টি হয়েছে।

ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কান্ট্রি এডভাইজর শফিকুল ইসলাম, জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সেক্রেটারি হেলাল আহমেদ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও সদস্য সচিব মো. বজলুর রহমান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী এবং পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মজাহেরুল হক সহ অন্যান্যরা।

সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করেন এইড ফাউণ্ডেশন, ব্যুরো অফ ইকোনোমিক রিসার্চ – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, নাটাব, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল – ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট।

সারাবাংলা/ওএম/এনএইচ

তামাকজাত পণ্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর