কক্সবাজার-ভালুকায় ১৫ একর পাহাড় ও বনভূমি উদ্ধার দুদকের
২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ২০:১৪
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বনভূমি দখল ও পাহাড় ধ্বংস করে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের ঘটনা বন্ধে কক্সবাজার ও ভালুকায় আকস্মিক অভিযান চালিয়ে ১৫ একর পাহাড় ও বনভূমি উদ্বার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব ভট্টাচার্য্য সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সারাবাংলাকে জানান, দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরীর নির্দেশে দু’টি শক্তিশালী টিম গঠন করে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়। কক্সবাজারের পাহাড় রক্ষা অভিযানের নেতৃত্ব দেন দুদকের উপপরিচালক লুৎফুল কবীর চন্দন, ময়মনসিংয়ের ভালুকায় দুদক সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী। অভিযানে সহায়তা করে পুলিশ, র্যাব ও স্থানীয় প্রশাসনের একটি সমন্বিত টিম।
প্রণ ভট্টাচার্য্য আরও জানান, বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদফতর এবং দখলদারদের মধ্যে ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে কক্সবাজারের ফাতেরঘোনায় ৫ একর পাহাড় ধ্বংস এবং ময়মনসিংহের ভালুকায় ১০ একর বনভূমি বেদখল হয়েছে। এ অভিযোগ পাওয়ার পরপরই জানা যায়, এ পাহাড়টি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দখলে নেওয়ার পর পর্যায়ক্রমে কয়েকদফা হাত বদল করে লাখ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে। এতে লাভবান হয়েছে গডফাদাররা। এর মধ্যে ৫ একর পাহাড় সম্পূর্ণ কেটে ফেলে গড়ে তোলা হয়েছে বহু স্থাপনা। আজ বেশকিছু স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে এবং পাহাড়ে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এ অভিযান আগামীকালও (৩০ জানুয়ারি) অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে, ময়মনসিংয়ের ভালুকায় বন বিভাগের ১০ একর জমি দখল করে বিশাল সীমানা প্রাচীর তৈরি করে দখল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন স্থানীয় মাফিয়া কর্মকাণ্ডের হোতা শহীদুল ইসলাম শহীদ, ওরফে বাউন্ডারি শহীদ। দুদক সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দুদক টিম সোমবার (২৮ জানুয়ারি) পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় অবৈধ দখল চিহ্নিত করেন। এরপর মঙ্গলবার সকাল থেকে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ময়মনসিংহয়ের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সমন্বয়ে ১০ ফুট লম্বা সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয় এবং বন বিভাগের জমি দখলমুক্ত করা হয়। দীর্ঘদিনের এ দখলের ফলে বনবিভাগ কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছিল।
এ দু’টি অভিযান সম্পর্কে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের প্রধান মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, পাহাড় ধ্বংস ও বনভূমি দখলের প্রধান কারণ দুর্নীতি। আর এ দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত পরিবেশ অধিদফতর এবং বন বিভাগ। এতে দুর্নীতিবাজরা শক্তিশালী হচ্ছে, আর প্রতিষ্ঠান নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। দুদক এ অচলায়তন ভাঙবে, পাহাড় ও বনসম্পদ রক্ষার অভিযানের পাশাপাশি দুর্নীতির চক্র উৎপাটন করবে। দুই জেলার জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে কঠোর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/এসজে/টিআর