সংসদ বাতিল করে নতুন নির্বাচন দাবি বিএনপির
৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ১৩:১২
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ বাতিল করে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তিও দাবি করেছে দলটি। মুক্ত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ‘পুন:নির্বাচন’-এ অংশ নিতে চায় তারা।
একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন বুধবার (৩০ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এসব দাবি তোলেন। সকাল ১১ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত চলে এ মানববন্ধন।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে দিয়ে, রাষ্ট্র যন্ত্রকে ভেঙে দিয়ে দখল দারিত্বের একটা পার্লামেন্ট গঠন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের সাথে সাথেই বলেছি যে, আমরা এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করছি এবং তখনই আমরা বলেছি একটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের যে রায়, সেই রায়কে দিয়ে একটি সরকার গঠন করতে হবে।’
আজকে আমরা আবার তারই পুনরাবৃত্তি করছি- আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন পুনরায় অনুষ্ঠান করতে হবে। সেখানে জনগণ যেন তাদের রায় দিতে পারে নির্বিঘ্নে, অবাধে, সুষ্ঠুভাবে— এই অবস্থা করতে হবে। এটার প্রয়োজনেই সবার আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল বন্দি, যাদেরকে মিথ্যা মামলায় আটক রাখা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা আহ্বান জানাতে চাই, জনগণের অধিকার রক্ষা করার জন্য, আমাদের ভোটের অধিকার রক্ষা করার জন্য, আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার রক্ষা করার জন্য আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। এই পার্লামেন্টকে বাতিল করে নতুন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানাই।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ’৩০ ডিসেম্বর কোনো নির্বাচন হয়নি। এই সরকার, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ষড়যন্ত্র করে তথাকথিত এমপিদের নাম ঘোষণা করেছে এবং একটি সংসদ ঘোষণা করেছে। এই সংসদ সম্পূর্ণ অবৈধ এবং এর সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, ‘এই সংসদ অবৈধ, এই সংসদ ডাকাতির সংসদ, এই সংসদ কলঙ্কিত সংসদ। তাই আমরা দাবি করছি, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন হতে হবে, যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিরা সংসদে যাবে।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আজ যে সংসদ বসতে যাচ্ছে সে সংসদ জনগণের সংসদ নয় , জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। কারণ, এই নির্বাচনে মানুষ তাদের ভোটের অধিকার হারিয়েছেন। এই নির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি, এই নির্বাচন করেছে প্রশাসন, পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এই নির্বাচনে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না
তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন দেখে আমরা নির্বাক হয়েছি, যেটা প্রত্যাশা করেছিলাম সেটা পাইনি। এই নির্বাচন আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। শুধু তাই নয় অবিলম্বে নতুন করে আরেকটা নির্বাচন করার দাবি জানাচ্ছি।’
মওদুদ বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। তাহলে এদেশের মানুষ আবার ভোটের অধিকার ফিরে পাবে এবং একটি কার্যকরী সংসদ বাংলাদেশ দেখতে পাবে। আর সেটা করার জন্য দেশের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং আমাদের যে সকল নেতাকর্মী জেলে আছে, পালিয়ে আছে তাদেরকে মুক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করি এবং তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে নতুন করে নির্বাচন দাবি জানাই। আর এটার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।’
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, কেন্দ্রীয় নেতা এমরান সালেহ প্রিন্স, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুস সালাম আজাদ, শিরিন সুলতানা, বিলকিছ জাহান শিরিন, শফিউল বারী বাবুসহ অন্যরা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী।
সারাবাংলা/এজেড/জেডএফ