৪ জেলায় দুদকের অভিযান, অনুপস্থিত শিক্ষকরা
৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ২০:২৩
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান ফিরিয়ে আনতে দেশব্যাপী অভিযান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাঙামাটি, দিনাজপুর, ফরিদপুর ও ঢাকার ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। তবে এদিনও বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের উপস্থিত পাওয়া যায়নি, উঠে এসেছে নানা অনিয়ম।
বুধবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।
তিনি বলেন, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন- ১০৬) দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযোগ আসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা যথাসময়ে উপস্থিত হন না এবং বিভিন্ন খাত দেখিয়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এতে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যাহত ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশের চার জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন দুদক মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী। এরই অংশ হিসেবে একযোগে রাঙামাটি, দিনাজপুর, ফরিদপুর এবং রাজধানী ঢাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানের সময় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে কাঞ্চনডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গরীবপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রহিমাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিন্নাগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নবাবগঞ্জ মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ৭ জনের মধ্যে ৬ জন প্রধান শিক্ষককেই অনুপস্থিত পাওয়া যায়।
ফরিদপুর সদরের চারটি বিদ্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ফরিদপুরের একটি টিম। অভিযানে টিম টেপাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অনুপস্থিত পায়। এসময় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
অন্যদিকে ফরিদপুরের বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয় এবং হালিমা গার্লস স্কুল ও কলেজে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের প্রমাণ পাওয়া গেলে তা অভিভাবকদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাঙামাটির রাণীদয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় বাধ্যতামূলকভাবে দুই হাজার টাকা দেওয়া ও কোচিং করতে বাধ্য করার প্রমাণ পায়। দুদক টিম এ অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়।
এদিকে, গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিচালিত অভিযানে প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে গৃহীত অবৈধ অর্থ পুনরুদ্ধারে ওই বিদ্যালয়ে ফের অভিযান পরিচালনা করে দুদক টিম।
এ সময় আগের দিন বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক দুদক টিমকে মুচলেকা দেন যে, অতিরিক্ত নেওয়া সব অর্থ অবিলম্বে দুদক টিমের উপস্থিতিতে অভিভাবকদের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।
অভিযান পরিচালনা প্রসঙ্গে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাজমান অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা দূর করতে দুদকের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সমান্তরালে জনসাধারণকেও দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানে নামতে হবে।
সারাবাংলা/এসজে/এনএইচ