রাখাইনে ফের সেনা অভিযান, অস্বীকার সেনাবাহিনীর
৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:১৬
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে রাখাইন অঙ্গরাজ্যে ফের অভিযান চালানোর অভিযোগ ওঠেছে। অভিযানে এক শিশুর প্রাণহানি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। কিন্তু সেনাবাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। খবর ইরাবতির।
শনিবার (২৬ জানুয়ারি) রাখাইনের রাথেডং পৌরসভার থা মি হ্লা গ্রামে অভিযান চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে গ্রামবাসীরা। অভিযানে একটি কামান দিয়ে চালানো হামলায় এক সাত বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় আইনপ্রণেতারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানাবেন তারা।
এদিকে, সোমবার (২৮ জানুয়ারি) রাথেডংয়ের অহন চাউং গ্রামে কামান দিয়ে অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী পুলিশ।
গ্রামবাসীদের কাছ থেকে ছিনতাই
রাখাইনের একাধিক আইনপ্রণেতার ভাষ্য, সামরিক বাহিনীর ৯৯তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন শনিবার থা মি হ্লা গ্রামে অভিযান চালিয়েছে। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে স্বর্ণ, গহনা, নগদ অর্থ ও কয়েক ডজন মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে।
রাখাইন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের সদস্য দাও খিন স ওয়াই বলেন, তারা (সামরিক বাহিনী) জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে যথোপযুক্ত কারণে লড়াই করতে পারে। কিন্তু নির্দোষ বেসামরিক নাগরিকদের হয়রানি আমার কাছে সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। গ্রামবাসীরা আমাদের কাছে যেমন অভিযোগ করেছে, আমি কর্তৃপক্ষের কাছে তেমনটাই লিখবো। তাদের এ বিষয়ে তদন্ত করতে অনুরোধ করবো।
উল্লেখ্য, রাখাইনে জঙ্গি গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওয়াই বলেন, তাদের মধ্যকার লড়াইয়ের কারণে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বেসামরিক নাগরিকরা। অনেককে ‘বেআইনি সহযোগিতা আইনে’র আওতায় আটক করা হচ্ছে। দুই পক্ষের উচিৎ লড়াই থামিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোজা।
স্থানীয় আইনপ্রণেতা ইউ থান নাইং বলেছেন, সামরিক বাহিনীর একটি দল স্থলবোমা হামলার শিকার হওয়ার পর এই অভিযান চালানো হয়।
এদিকে, সামরিক বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ’র কার্যালয়ের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ মিন তুন অবশ্য অভিযানের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ে গ্রামে প্রবেশ
সোমবার রাথেডংয়ের অহন চাউং গ্রামে সীমান্তরক্ষী পুলিশ ও সেনা সদস্যরা এক যৌথ তল্লাসি অভিযান চালিয়েছে। আটক করেছে স্থানীয় শিক্ষকসহ একাধিক গ্রামবাসীকে।
স্থানীয় বাসিন্দা কোঁ মং হতায় বলেন, সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার ভয়ে প্রায় ৪০ জন গ্রামবাসী নিকটবর্তী অপর একটি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে।
হতায় বলেন, প্রায় ২০০ সেনা সদস্য এলোপাথাড়িভাবে গুলি ছুড়তে ছুড়তে গ্রামে প্রবেশ করেছে। আরাকান আর্মির অতর্কিত হামলার শিকার হওয়ার পরই এই অভিযান চালায় তারা।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর প্রধানের কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে কোন সাড়া মেলেনি।
এএ তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সেনাবাহিনী গ্রামটিতে অন্তত ৭০টি কামান হামলা চালিয়েছে। এছাড়া এক একাধিক স্থানীয় শিক্ষকসহ গ্রামবাসীদের গ্রেফতার করেছে।
সারাবাংলা/ আরএ