জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে: ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম
৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:০৪
। । স্টাফ করেসপন্ডেন্ট । ।
ঢাকা: কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া একাদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষক সংস্থা ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর থেকে, ১০ জানুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত নির্বাচন পূর্ববর্তী বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীগণের আচরণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও নির্বাচন পরবর্তী ৩০ দিন পর্যন্ত তথ্য ও ঘটনাপ্রবাহের বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একাদশ নির্বাচনে সারাদেশে সর্বমোট ২২টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন কমিশন সহিংসতার ঘটনায় ভোটগ্রহণ স্থগিত করে। সহিংসতায় আটজন আওয়ামী লীগ কর্মী ও চারজন বিএনপি কর্মীসহ মোট ১৮ জনের প্রাণহানি হয়। আহত হন শতাধিক।
নির্বাচনের সময় সারাদেশে সর্বমোট ৬ লাখ ৮ হাজার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রত্যেক কেন্দ্রে দুইজন পুলিশ ও ১২ জন আনসার বাহিনী সক্রিয় ছিলেন। বিভিন্ন জেলায় শতাধিক সংঘাতের ঘটনার বিপরীতে প্রায় ৭০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পূর্ববর্তী যেকোনো সাধারণ নির্বাচনের তুলনায় এবারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনেক ভাল ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নির্বাচনের পর বিভিন্ন প্রার্থী ও দল নিজ নিজ অভিযোগ নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করে। বর্তমানে তদন্ত ও নিষ্পত্তির ব্যাপারটি প্রক্রিয়াধীন আছে।
কিছু সংসদীয় আসনের প্রার্থী মামলার অজুহাতে প্রশাসন কর্তৃক হয়রানির শিকার হলেও নির্বাচন কমিশন এসব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনের দাবি।
নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেট, প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ নির্বাচন কাজে নিয়োজিত প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ সার্বিকভাবে কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে সহযোগিতা করেছেন এবং পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে কোন প্রকার বাধা সৃষ্টি হয়নি বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
উক্ত প্রতিবেদনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম কর্তৃক বেশ কিছু সুপারিশও জানানো হয়। এগুলো হলো, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী ও আন্তরিক হওয়া, নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন কমিশন হতে সম্মানি ভাতা প্রদান, নির্বাচনকালীন সময়ে প্রার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা ও বিদেশি পর্যবেক্ষক নির্ভরশীলতা থেকে দূরে রাখতে দেশের বিভিন্ন পেশার স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে উৎসাহিত করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় পরিচালক ড মোহাম্মদ মাসুম চৌধুরী, আইনি সহায়তা কেন্দ্র আসক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো শামসুল হক, ইএমএম এর সমন্বয়কারী মো মনির হোসেন, মানবাধিকার কর্মী মো শহিদুল ইসলাম, খন্দকার ফারুক আহমেদ ও মোসাম্মৎ রুপা আক্তার।
উল্লেখ্য, ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত ৩১ টি এনজিও এবং ২৬টি সুপ্রতিষ্ঠিত এনজিওসহ মোট ৫৬টি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের এনজিও সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত পর্যবেক্ষক কমিটি। সারাদেশে ৪০ হাজার ১৮৩ টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে, ফোরামের ৩১ টি সদস্য সংস্থার ৫,৮১১ জন পর্যবেক্ষক ২৩৯ টি আসনের মোট ১৭,১৬৫ টি কেন্দ্রে ৮০ শতাংশ আসন ও ৪২.৭% কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছে।
সারাবাংলা/ওএম/এনএইচ