Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সড়কের পাশে মরা গাছের সারি, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল পথচারীর


১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:১২

।। সোহেল রানা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

দিনাজপুর: রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে আছে শত শত মরা গাছ। এরই মাঝে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল স্কুল শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের। এমন চিত্র দেখা যায়, দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলিতে ১ টি পৌরসভা ও ৩টি ইউনিয়নে। যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটবে জেনেও নেওয়া হচ্ছে না সঠিক উদ্যোগ।

জানা যায়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় ২০ বছর আগে বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও সংস্থা স্থানীয় তিন শতাধিক নারী-পুরুষকে অংশীদার করে ৩৬ কিলোমিটার রাস্তার দু-পাশ দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ৩৬ হাজার গাছ রোপণ করে। গাছগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় বেশির ভাগ গাছ মরে গেছে। সেগুলো কেটে ফেলা হয়নি। তবে রাতের আঁধারে কিছু কিছু গাছ কেটে নিয়ে যায় একটি চক্র। এতে প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অংশীদাররা।

দিনাজপুর, মরা গাছ, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

স্কুলে যাওয়া ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী বন্যা আক্তার বলেন, এই রাস্তার দুপাশ দিয়ে অনেক মরা গাছ রয়েছে। আমরা রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে স্কুলে যাই। কখন যে এসব গাছের ডাল ভেঙ্গে আমাদের মাথায় পড়ে! আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি এই গাছগুলো দ্রুত কেটে ফেলার জন্য।

ছাতনী চারমাথা গ্রামের কৃষক সারোয়ার বলেন, আমি কষ্ট করে ধান আবাদ করেছি। আমার জমি রাস্তার পাশের মরা গাছগুলো বার বার জমির ফসলের ওপর ভেঙ্গে পড়ে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।

স্থানীয় পথচারীরা বলেন, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। কখন যে মরা গাছগুলো আমাদের মাথার ওপর ভেঙ্গে পড়ে এই ভয় সবসময় মনের মধ্যে থাকে। এর আগে একজনের মাথায় ডাল ভেঙে পড়ে ছিল, আল্লাহর রহমতে সে বেঁচে গেছে। আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি গাছগুলো দ্রুত কর্তনের ব্যবস্থা করার জন্য।

বিজ্ঞাপন

একজন অংশীদার জানান, গাছগুলো লাগার সময় এনজিও আমাদের অংশীদার করে নিয়েছিল। ২০ বছর আগে এই গাছ গুলো রোপণ করা হয়। আমরা এখান থেকে ৬০ ভাগ অর্থ পাবো। কিন্তু গাছগুলো বেশির ভাগ মরে গেছে। গাছ না কাটায় রাতের আঁধারে কে বা কারা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন এসব মরা গাছ। আমাদের আবেদন গাছগুলো দ্রুত কর্তন করে আমাদের প্রাপ্য অর্থ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।

আরেক ভুক্তভোগী জানান, নিয়ম আছে মেয়াদ শেষে গাছ কেটে বিক্রি করে মোট অংশ থেকে এনজিও পাবে ২০শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদ পাবে ২০শতাংশ ও ভুক্তভোগীরা পাবে ৬০ শতাংশ।

দিনাজপুর, মরা গাছ, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

৩নং আলীহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম রসূল বাবু সারাবাংলাকে জানান, আমি ৭ বছর ধরে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছি। এই ৭ বছর বিভিন্ন দপ্তরে গাছগুলো কর্তনের বিষয়ে বার বার কথা বলেছি। তারা গাছগুলো কর্তনের জন্য চিহ্নিত করে কিন্তু আজও গাছগুলো কর্তনের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

তিনি আরও বলেন, তবে আমি আলীহাট ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের পক্ষে ও আমার পক্ষ থেকে সরকার মহোদয় ও এই দপ্তরের সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন তাদের অনুরোধ করছি গাছগুলো দ্রুত কর্তন করে আবারও গাছ লাগানো সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য। নতুন করে করে গাছ লাগালে পথচারীরা যেমন ছায়া পাবে, তেমনি পরিবেশ আগের মত সবুজ হবে। পাশাপাশি লাভবান হবেন ভুক্তভোগীরা।

বন বিভাগ দিনাজপুর চরকাই রেঞ্জ কর্মকর্তা নিশিকান্ত মালাকার সারাবাংলাকে জানান, এই গাছগুলো আমাদের বন বিভাগের নয়। সব গাছ যে বন বিভাগের হবে তাও না। তবে এসব রাস্তার গাছ কিছু এনজিও লাগিয়েছে। আমাদের গাছ কাটারও কিছু আইন আছে। আসলে সেগুলো তাদের হয়তো জানা নেই। আর এই কারণে হয়তো গাছগুলো কর্তনে তাদের বিলম্বের মধ্য পড়তে হচ্ছে। তারা যদি আমাদের কাছে আসে তবে গাছগুলো কর্তনের জন্য সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনএইচ

ঝুঁকি নিয়ে চলাচল দিনাজপুর মরা গাছ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর