Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শৈশবের দেশই আমার দেশ: শঙ্খ ঘোষ


১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৯:৪১

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত কবি কলকাতানিবাসী শঙ্খ ঘোষ বলেছেন, যে দেশের হাওয়া মাটিতে জলে গোটা কৈশোর কেটেছে সেই দেশই তো আমার। ৭২ বছর ধরে প্রায় প্রতি মুহূর্তে সেই ১৫ বছরকেই তো ধারণ করে আছি। তাই এটা আমারও দেশ। শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাংলা একাডেমি চত্বরে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে শৈশবের স্মৃতি রোমন্থনে তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

চিকিৎসকের পরমার্শ অনুযায়ী কবি শঙ্খ ঘোষের কথা বলার বারণ থাকার তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রামেন্দু মজুমদার।লিখিত বক্তব্যে শঙ্খ ঘোষ বলেছেন, ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলার এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক অতিথি হিসাবে আপনারা আমাকে আহ্বান করেছেন আজ, আমি সম্মানিত। মেঘনা নদীর কূলে চাঁদপুর আমার জন্মভূমি, সন্ধ্যানদীর কূলে বানারীপাড়ায় আমার পিতৃ-পিতামহের ভিটে। কীর্তনখোলা নদীর ধারে বরিশাল শহরে লালিত হয়েছি আমি সাড়ে তিন বছর বয়স পর্যন্ত। আর গোটা স্কুল জীবনটা আমার কেটেছে পদ্মা নদীর পাড়ের হার্ডিঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন পাকশী নামের এক আশ্চর্য কলোনিতে।’

‘পনের বছর বয়সের পর জীবনের আরও ৭২ বছর কাটল গঙ্গা নদীর কূলে যে কলকাতা শহরে। সেখান থেকে বুড়িগঙ্গার তীরে ঢাকায় এসেছি আমি আপনাদের এক অতিথি হিসাবে। সম্মানবোধ করছি আমি তাই। কিন্তু সেই সঙ্গে একটা সঙ্কোচে ছেঁয়ে যাচ্ছে মন, যে দেশের হাওয়া মাটিতে, জলে গোটা কৈশোর কেটেছে সেই দেশই তো আমার। ৭২ বছর ধরে প্রায় প্রতি মুহূর্তে সেই ১৫ বছরকেই তো ধারণ করে আছি আমি। তাই এটা আমারও দেশ। এখানে কি আমার অতিথি হয়ে আসা সাজে?’, বলেন তিনি।

তিনি আর বলেন, “বহুবার এসেছি আমি বাংলাদেশে। কিন্তু বহুবার এড়িয়ে গিয়েছি এখানকার নানা আনুষ্ঠানিক আহ্বান। এবারে স্বর আর শরীরের জীর্ণতা সত্ত্বেও এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে মনে হলো আমার জীবনের এক নতুন অভিজ্ঞতা। সংকোচবশত হলেও আমি আজ আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানাই। কৃতজ্ঞতা জানাই সেই একুশের স্মৃতিকে। যার মধ্য দিয়ে আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষার এতদূর বিশ্বজনীন মর্যাদা আজ। ১৯১৩ সালের বিশ্বসাহিত্য জগতে রবীন্দ্রনাথের আবির্ভাব, ১৯৫২ সালে ঢাকা শহরে একুশে আন্দোলন, ১৯৭১’এ নতুন দেশ হিসাবে বাংলাদেশের জন্ম। আর ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসাবে সেই একুশে ফেব্রুয়ারিকে বিশ্বজগতে স্বীকৃতি, আমার কাছে আশা করি, আরও অনেকের কাছে এই চারটি মুহূর্ত হলো আমাদের ভাষার জন্য এক জয়োগর্বের মুহূর্ত। সেই গর্ব নিয়ে আজ উচ্চারণ করতে চাই, পঞ্চাশের দশকে লেখা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের একটি উচ্চারণ, ‘ওপারে যে বাংলাদেশ, এপারেও সে বাংলা’। শুধু ঢাকায় দাঁড়িয়ে কথাটি বলছি বলে, লাইনটা একটু ঘুরিয়ে নিতে চাই ‘এপারে যে বাংলাদেশ, ওপারেও সেই বাংলা’।”

বিজ্ঞাপন

আসতে না পারলেও মনটা পড়ে থাকে বইমেলায়: প্রধানমন্ত্রী

‘একটি কথা ভেবে বিস্মিত হই, মাঝে মাঝে যে কত আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল এই বাংলাদেশ নামটি। সেই বাংলাদেশের সমস্ত স্বপ্ন সফল হবে, হয়ে উঠবে একদিন এই পরম প্রত্যাশা নিয়ে আজ এই গ্রন্থমেলার উদ্বোধন হউক, আপনাদের সবাইকে আমার ভালবাসা’ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

এর আগে, উদ্বোধনী স্মারকে স্বাক্ষর করে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯’র উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯ প্রাণের মেলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর