Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুদকের ভয় দেখিয়ে ৪০ লাখ টাকা প্রতারণা, আটক ২


২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:৩৯

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ৫০০ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। ২০১৪ সাল থেকে চক্রটি এই প্রতারণা শুরু করে।

এই চক্রের দুই সদস্যকে আটকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে জধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এসময় র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার এসপি মুহিউদ্দিন ফারুকী জানান, গত ২৭ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে র‌্যাবের কাছে এক অভিযোগ করা হয়। সেখানে জানানো হয়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে মামলার ভয় দেখিয়ে প্রতারণা করছে একটি চক্র। এর ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে হাজারীবাগ থেকে দুজনকে আটক করা হয়। এরা হলেন- মাদারীপুরের রাজৈর থানার আনিছুর রহমান ওরফে বাবুল (৩৬) ও কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইয়াছিন তালুকদার (২৩)।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসপি মুহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, দুদক একটা আস্থার জায়গা, তাই এটিকে কেন্দ্র করে প্রতারণা করে সুযোগটি কাজে লাগিয়েছিল একটি চক্র। তাদের সাত থেকে দশটি গ্রুপ রয়েছে। চক্রটি সদস্য সংখ্যা সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন।

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে তারা প্রতারণার কাছ করে আসছিল। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে ৩৫-৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল তারা। এ জন্য তারা বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করতো। এরা কখনও কক্সবাজার, কখনও বরিশাল আবার কখনও চট্টগ্রাম কিংবা মাদারীপুর থেকে টাকা সংগ্রহ করা হতো। এভাবেই তারা প্রতারণা করে আসছিল।’

বিজ্ঞাপন

২০১৪ সালে মাদারিপুরের রাজৈর থানার এক প্রতারকের মাধ্যমে বাবুল এ চক্রের সঙ্গে কাজ শুরু করেন বলে জানায় র‌্যাব। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রথমে তারা বিভিন্ন সরকারি অফিসে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পর্যবেক্ষণ করে। এরপর কর্মকর্তা বা কর্মচারিদের টার্গেট করে।  কর্মকর্তাদের মোবাইল নাম্বার দপ্তরে না পেলে সরকারি টেলিফোন বই থেকে তাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। এরপর তাদের দুর্নীতির মামলার দায়েরের ভয়-ভীতি দেখায় প্রকারক চক্র। এতে দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভয়ে তাদেরকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করতেন। এভাবেই তারা প্রায় ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়া হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ইয়াসিন তালুকদার নামে হাজারীবাগের একজন টেলিকম দোকানদারের সহায়তায় তারা সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষদের জাতীয় পরিচয়পত্র হাতিয়ে নিয়ে সেগুলো দিয়ে চক্রের সদস্যরা সিম রেজিস্ট্রেশন ও বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলতো। আটক বাবুলের কাছ থেকে ১৪টি বিকাশ অ্যাকাউন্ট করা সিম ও তিনটি মোবাইল জব্দ করা হয়। সে এসব সিম দিয়ে আট লাখ টাকা লেনদেন করেছে। অপরজন ইয়াসিনের কাছে ১২টি সিম ও ১৮টি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। এসময় তার একটি বিকাশ অ্যাকাউন্টে এক লাখ টাকাও পাওয়া গেছে।

এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, ৫০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিশ্চয় দুর্নীতিগ্রস্ত। তা না হলে তারা প্রতারণার শিকার হতেন না। তাই তাদের বিষয়ে যদি দুদক চায় তারাও তদন্ত করতে পারেন কিংবা দুদক যদি র‌্যাবকে দায়িত্ব দেয় তাহলে তারাও বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএইচ/এসএমএন

দুদক প্রতারণা সরকারি কর্মকর্তা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর