Friday 04 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘এসডিজি অর্জনে সঠিক পথেই বাংলাদেশ’


৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৭:২৮
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা : টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) নির্ধারিত লক্ষ্যের তুলনায় পিছিয়ে থাকলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে এগিয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ সঠিক পথেই রয়েছে বাংলাদেশ।  এসডিজি বাংলাদেশ প্রগ্রেস রিপোর্ট-২০১৮ তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, যেসব ক্ষেত্রে অগ্রগতি এসেছে সেগুলো হচ্ছে, দারিদ্য নিরসন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক খাতে জিডিপির একটি অংশ ব্যয়, পাঁচ বছরের নিচে প্রতি হাজারে শিশু মৃত্যুর হার, নবজাতকের মৃত্যুর হার, ১৫ বছরের ঊর্ধে্ব তামাকপণ্য সেসব কমে যাওয়া, স্বাস্থ্য গবেষণা ও মৌলিক স্বাস্থ্য সেবায় ওডিএ অর্থ বরাদ্দ, টাকা ছাড়া গৃহস্থালী কাজ কমিয়ে আনা, জাতীয় সংসদে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ব্যবহার, কর্মসংস্থান প্রতি প্রকৃত জিডিপি অর্জন, অকৃষি খাতে অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান কমিয়ে আনা, উৎপাদনশীল খাতে মূল্য সংযোজন বৃদ্ধি, মোবাইল নেটওয়ার্ক কভারেজ, প্রতি লাখে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানির শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়া, মানবপাচার কমানো, রফতানির আয়ের তুলনায় বৈদেশিক ঋণ গ্রহণে কাঙ্তক্ষি সন মাত্রা এবং ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য খাতের অনেক সূচকেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। পরিস্কার পানি ও সান্যিটেশন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার, বেকারত্বের হার কমানো, তরুণদের কাজে লাগানো, আর্থিক অন্তর্ভূক্তির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং সেবা প্রাপ্তির হার, উৎপাদনশীল খাতে কর্মস্থান, জিডিপির তুলনায় সরকারের রাজস্ব আদায়, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সঠিক পথে থাকলেও লক্ষ্য অর্জনে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।

এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তথ্য প্রাপ্তি। এছাড়া কৃষি জমি রক্ষা, পরিবেশের ক্ষতি না করে শিল্পায়ন, স্বল্প খরচে সৃজনশীলতা ও সমস্যার সমাধান, সম্পদ আহরণ, জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব বাড়ানো, কর্মমুখী শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা, তরুণদের  জন্য শোভন কর্ম নিশ্চিত করা, অভ্যন্তরীণ শিল্পের সুরক্ষা, গুণগত উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং রফতানি বৈচিত্রকরণ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, ইউএনডিপির কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মিয়া সেপ্পো, সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এবং মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।  অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার পাশাপাশি প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বেশ কিছু সূচকে শৃঙ্খলা ভারতের তুলনায় ভাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসডিজি বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তবে আমাদের নির্ভরযোগ্য ও সঠিক তথ্যের কিছুটা ঘাটতি আছে। সেজন্য বিবিএস ও তথ্য প্রদানকারী সংস্থাগুলোর সংস্কার আনা হবে। সব ধরনের বিদেশি বিনিয়োগের অর্থ কার্যকর ব্যবহারের চেষ্টা থাকবে। পাশাপাশি এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে সেরকারি খাত, এনজিও, আন্তর্জাতিক এনজিও, সুশিল সমাজসহ সকলকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চান বলে জানান তিনি।

এসময় ড. মসিউর রহমান বলেন, কর রাজস্ব হার বাড়াতে হবে। বৈদেশিক সহায়তার পাইপলাইনের অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। শিল্প খাতে বেশ কিছু সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হলেও দ্রুত সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে আরও পদক্ষেপ প্রয়োজন।

পরিবেশের ক্ষতি না করে শিল্পায়ন কিভাবে হবে, কৃষি জমির কমে যাওয়া কীভাবে রোধ করা যাবে সে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘তরুণদের কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। জনমিতি সুবিধা কাজে লাগাতে কর্মহীনতা কমাতে হবে। পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে স্বল্প খরচে উদ্ভাবনী বিষয়গুলো জাগ্রত করতে হবে। পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নতি ও আয় বৈষম্য কমাতে হবে। তাহলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন দ্রুত হবে।’

মিয়া সেপ্পো বলেন, দারিদ্র বিমোচনের ক্ষেত্রে সামর্থ্য অর্জন হলেও কর্মসংস্থান বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জে রয়েছে বাংলাদেশ। আয় বৈষম্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যতম। এক্ষেত্রে নীতি সহায়তার পর্যাপ্ততার অভাব রয়েছে। লিঙ্গ বৈষম্য কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভালো করলেও জাতীয় পর্যায়ে অ্যাকশন প্ল্যান প্রয়োজন। মধ্য আয়ের দেশে পৌঁছতে হলে সুশাসন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল নীতিতে আনা প্রয়োজন।

সারাবাংলা/জেজে/এসএমএন

এসডিজি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর