এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে বড় বাধা তথ্য ঘাটতি: পরিকল্পনামন্ত্রী
৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৮:৫৬
।। স্টাফ করসপনডেন্ট ।।
ঢাকা: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে মানসম্মত ও সঠিক তথ্য ঘাটতি সবচেয়ে বড় বাধা। এটা আমার ঘরের ব্যাপার। তাই পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং বিবিএস সংস্কারের বিষয়ে কি করা যায় সেটি উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।
রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মধ্যবর্তী মূল্যায়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘একটি বিষয় এসেছে অতি ধনী বাড়ছে। এটাকে অতি ধনী না বলে বলা যায় সম্পদ বাড়ছে। এটা আনন্দের ব্যাপার। আমরা পজেটিভ ভাবি। এই মুহূর্তে যেখানে আমাদের সম্পদের সবচেয়ে অভাব, সেখানে যদি সম্পদ বাড়ে তাহলে আমরা তাদের সুরক্ষা দেব, যাতে সম্পদ আরো বাড়তে পারে। রাজনৈতিক অর্থনীতিতে এটা বোধহয় গ্রহণযোগ্য হবে।’
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অংশ নেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র (এফবিসিসিআই) সভাপতি শফিউল আলম মহিউদ্দিন, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আসিফ-উজ-জামানসক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘দারিদ্র নিরসন এক নম্বর আলোচনায় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আঞ্চলিক বৈষম্য আমাদের অদৃষ্টের পরিহাস। যে আঞ্চলিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করলাম, সেই বৈষম্য দেশের ভিতরেই। তবে এই আঞ্চলিক বৈষম্য সারা বিশ্বে আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিল ক্লিনটনের গ্রামেও বৈষম্য রয়েছে। তবে এটি গ্রহণযোগ্য নয়। বৈষম্য কমাতে আমরা অনট্রাকে রয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার আনতে হবে। বিশেষ করে পুরনো আইনগুলো সংস্কার করতে হবে। জড়তা, অসারতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এসব কমাতে হবে। তবে বিধিবিধান সংস্কার না করলে আমলারা কি করবে। সবচেয়ে আনন্দের বিষয় রফতানিও বেড়েছে। এছাড়া নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। এটা খুবই আনন্দের বিষয়।’
ড. শামসুল আলম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় জানান, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে লক্ষ্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ২০২৭-১৮ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ছিল ৭.৪ শতাংশ। সেখানে বিবিএস’র তথ্য মতে অর্জিত হয়েছে ৭.৮৬ শতাংশ। এক্ষেত্রে ২০১৯-২০ অর্থবছওে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৮ শতাংশ।
এছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ছিল ৫.৮ শতাংশ, সেখানে অর্জন হয়েছে ৫.৩৭ শতাংশ অর্জন হয়েছে। এক্ষেত্রে অর্জন অনেক ভাল হয়েছে। মোট দেশজ বিনিয়োগ লক্ষ্য ছিল ৩১.৮ শতাংশ। এ লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। সরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ৭.৪ শতাংশ লক্ষের বিপরীতে অর্জিত হয়েছে অনেক বেশি।
সরকারি বিনিয়োগ বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে ড. শামসুল আলম জানান, বেসরকারি বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারি বিনিয়োগ বেড়েছে। এছাড়া ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ লক্ষ্য ছিল ২৪.৪ শতাংশ। এটি এখনো অর্জিত হয়নি। তবে অনট্রাকে রয়েছে। জাতীয় সঞ্চয় জিডিপির ৩০.২ শতাংশ লক্ষ্য থাকলেও এখনো অর্জিত হয়নি। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রবাসী আয় ঠিক মতো আসেনি। সেই সঙ্গে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পুরোটা অর্জিত হয়। তাই সঞ্চয় কম হয়েছে।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এক শতাংশ প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিমান বিনিয়োগ কর্মসংস্থান ও যে পরিমান দারিদ্র নিরসনের কথা সেটা হচ্ছে না গত কয়েক বছর ধরে। সেটি কি জন্য হচ্ছেনা তার কারণ অনুসন্ধান করা দরকার।’
সারাবাংলা/জেজে/এমও