Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রিজার্ভ চু‌রির মামলা নিষ্প‌ত্তিতে ‌তিন বছর সময় লাগবে’


৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:০৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: ক্ষতিপূরণসহ রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে দায়ের করা মামলা নিষ্প‌ত্তি হতে তিন বছর সময় লাগবে বলে জা‌নিয়েছেন, মামলার আইনজীবী আজমাউলুল হোসেন কিউসি।

রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ চু‌রির মামলার পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে তি‌নি এ কথা জানান। এ সময় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান, বিএফআইইউ’র পরামর্শক দেবপ্রসাব দেবনাথ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম উপ‌স্থিত ছিলেন।

আজমাউলুল হোসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে দায়ের করা মামলা তিন বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি হবে। তবে বি‌ভিন্ন প‌রি‌স্থি‌তিতে এই সময় কম‌-বেশি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের (ফেড) সঙ্গে মামলার বিষয়ে চু‌ক্তি হয়েছে। তারা মামলার জন্য বি‌ভিন্ন ন‌থি, তথ্য সরবারহ করার পাশাপাশি সা‌ক্ষ্য দেবে। ১০৩ পৃষ্ঠার এজাহারে ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি, সাতটি প্রতিষ্ঠানসহ ২৫ জন অজ্ঞাতনামা লোক‌কে বিবা‌দী করা হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা পুরো অর্থ আমরা ফেরৎ পাব। কেননা পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ রয়েছে আমাদের হাতে।

মামলার খরচ প্রসঙ্গে বিএফআইইউ’র প্রধান রা‌জি হাসান ব‌লেন, মামলার বিষয়ে এক‌টি টিম কাজ করছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ল’ ফার্মের সঙ্গে আমাদের চু‌ক্তি হয়েছে। তাদের ঘণ্টা হিসেবে অর্থ প‌রিশো‌ধ করা হবে। তবে ঘণ্টায় কত টাকা প‌রিশোধ করতে হবে তা জানান‌নি তি‌নি।

তি‌নি জানান, এ পর্যন্ত রিজার্ভ চু‌রি মামলা করতে গিয়ে ৩ কো‌টি টাকার মতো খরচ হয়েছে। এছাড়া মামলার বিষয়ে যেসব কর্মকর্তা কাজ করছেন তারা সরকা‌রি নিয়ম অনুযা‌য়ী খরচ করছেন বলেও তি‌নি জানান।

রিজার্ভ উদ্বারে চু‌রি হওয়া অর্থের চেয়ে বে‌শি খরচ হবে কি না জানতে চাইলে রা‌জি হাসান বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে মামলা করা হয়েছে। এখানে খরচ মুখ্য বিষয় না। আমা‌দের লক্ষ্য চু‌রি হওয়া পুরো অর্থ ফেরৎ আনা।

এর আগে বাংলাদেশ সময় গত শুক্রবার ভোরে মামলাটি দায়ের করা হয়। ফিলিপাইনের ম্যানিলাভিত্তিক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আরসিবিসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং রিজার্ভ চুরির এই টাকা যাদের যাদের কাছে গিয়েছে তাদের আসামি করা হয়েছে। মামলায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ এবং মামলা পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট খরচ চাওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে নেয় হ্যাকাররা। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এই অর্থ চুরি করা হয়। চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২ কোটি ডলার এবং বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার প্রথমে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অবস্থিত রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) একটি শাখায় পাঠানো হয়। পরে এই অর্থ আরসিবিসি থেকে চলে যায় ফিলিপাইনের ক্যাসিনোতে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হওয়ার ১০ মাসের মধ্যে ৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ফেরৎ আনা হয়। এর মধ্যে রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার আগেই ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কা থেকে ২ কোটি ডলার ফেরৎ আনা হয়েছিল। একই বছরের ১২ নভেম্বর ফিলিপাইন থেকে আরও ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ফেরৎ আনা হয়েছে। পরবর্তী ২ বছরের বেশি সময়ে আর কোনো টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে ফিলিপাইনে রয়েছে অবশিষ্ট ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার (৫৫৭ কোটি টাকা)। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করার মাধ্যমে এই অর্থ ফেরৎ পাওয়ার পথ তৈরি হলো।

সারাবাংলা/জিএস/এটি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভূতের গলির বাসায় মিলল বৃদ্ধের মরদেহ
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:০০

সম্পর্কিত খবর