Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জয়পুরহাটে পানের দোকানেও মিলছে গ্যাস সিলিন্ডার!


৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২২:৫০

।। শামীম কাদির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

জয়পুরহাট: সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিক্রি হচ্ছে লিকুইড পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডার। এসব সিলিন্ডার বিক্রির ফলে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সাধারণ মানুষ। ওষুধের দোকান,পানের দোকান, মুদি দোকান ও কাপড়ের দোকানেও চলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চলের হাটবাজারের তিন শতাধিক দোকানে দেদারছে চলছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। অথচ জেলায় এলপি গ্যাস ব্যবসার জন্য লাইসেন্স রয়েছে একশ’টির মতো।

রাজশাহী বিভাগীয় বিস্ফোরক পরিদফতর সূত্র জানায়, সরকারি বিধি মোতাবেক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধা পাকা ঘর, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক সক্ষমতা-সংক্রান্ত লাইসেন্সসহ অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। একজন ব্যবসায়ী ওই সব শর্ত পূরণ করলেই কেবল এলপি গ্যাস বিক্রির নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন। লাইসেন্স ছাড়া কোনও দোকানে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করা যাবে না।

২০০৩ সালের দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কোনও ব্যক্তি যদি লাইসেন্স না নিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবসা করে তবে তার তিন বছরের কারাদণ্ড ও অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সমস্ত মালামাল বাজেয়াপ্ত করা যাবে। কিন্তু এই  আইন কেউই মানছেন না।

জয়পুরহাট জেলার খঞ্জনপুর এলাকার বাদশা চৌধুরী, আরাফাতনগর এলাকার শীতল চন্দ্র ও নতুনহাট এলাকার সোহেল হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি  জানান, এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ক্ষেত্রে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দেওয়া দরকার। নজরদারি না থাকার কারণে যত্রতত্র চলছে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি। ফলে সাধারণ মানুষ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

লাইসেন্সধারী গ্যাস বিক্রেতা মাসুম ট্রেডার্সের  আবদুল্লাহ্ আল মাসুম ও সিথি ট্রেডার্সের শওকত জামান জানান, গ্যাস সিলিন্ডার অনেকটা বোমার মতো। গ্যাস বিক্রি করতে হলে অবশ্যই পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স, বিস্ফোরক লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা থাকতে হবে। তা না হলে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে পারবে না। তারা আরও বলেন, বিস্ফোরক লাইসেন্স নিতে অনেক টাকা খরচ হয়। কিন্তু অবৈধ ব্যবসায়ীদের কারণে বৈধ ব্যবসায়ীদের বিক্রি কমে গেছে।

জয়পুরহাট জেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর মাহবুবউজ্জামান মানিক বলেন, লাইসেন্স ছাড়া যারা ব্যবসা করছে তাদেরকে আমরা লাইসেন্স করতে বলছি। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া গ্যাস ব্যবসায়ীদের সিলিন্ডার না দিতে ডিলারদেরকে নির্দেশ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন  বলেন, বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া এলপি গ্যাস সিলিন্ডার যারা বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে  খুব শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে জেলায় ৩০টি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এমনকি চলতি জানুয়ারি মাসেও ক্ষেতলাল উপজেলার মুন্দাইল ও জয়পুরহাট পৌর এলাকার হাউজিং অ্যাস্টেটে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

সারাবাংলা/এমএইচ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর