যারা অপরাধ করে তাদের বিচার হচ্ছে না: চার্জ শুনানিতে মওদুদ
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:১০
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নাইকো দুর্নীতি মামলার চার্জ শুনানি সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, যারা অপরাধ করেছে, আজ তাদের আদালতে বিচার হচ্ছে না। বিচার হচ্ছে আমাদের। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের চার্জ শুনানির সময় তিনি এসব কথা বলেন।
মওদুদ বলেন, ‘আমরা তো শুধু নাইকো চুক্তি ধারাবাহিকতায় রক্ষা করে আসেছি। যারা আপরাধ করেছে, তাদের তো বিচার হচ্ছে না।’
এদিন কারাগারে থেকে খালেদা জিয়াকে অস্থায়ী বিশেষ আদালতে বেলা ১২.৩৪ মিনিটে হাজির করা হয়। এরপরে বিচারক ১২.৩৭ মিনিটে এজলাসে ওঠেন। এজলাসে ওঠার পরে, বিচারক আব্দুর রেজ্জাক খান নাইকো দুর্নীতির মামলার সার্টিফাই কপির জন্য আবেদন জানান। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এই কপির বিরোধিতা করে বলেন, ‘মামলাটি চার্জ শুনানির স্টেজে রয়েছে, এখন সার্টিফাইড কপির নেওয়ার সময় না।’
অপর দুই আসামির একে এম মোশাররফ হোসেন ও শহিদুল ইসলামের চার্জ শুনানির জন্য সময়ের আবেদন জানান। বিচারক এ বিষয় আদেশ পরে দিবেন বলে জানান।
এরপর মওদুদ আহমদ নিজেই নিজের শুনানি শুরু করেন। প্রায় ৩০ মিনিট শুনানির পরে সময়ের জন্য পরবর্তী শুনানির জন্য সময়ের আবেদন জানান। বিচারক মওদুদ আহমদের আংশিক চার্জ শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছেন।
খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা হিসাবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন- আব্দুর রেজ্জাক খান, মওদুদ আহমেদ, মেজবাহ উদ্দিন, জাকির হোসেন, হেলাল উদ্দিনসহ প্রমুখ।
নাইকো দুর্নীতি মামলার প্রধান আসামিরা হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন।
এই মামলায় তিনজন আসামি পলাতক। এরা হলেন- সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহা-ব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
গত বছরের ৫ মে এই মামলায় অভিযুক্ত আরেক আসামি সাবেক সচিব শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতে খালেদা জিয়াসহ মামলার ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন জানান।
কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। পরের বছর ৫ মে ওই মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান। অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
নাইকো ছাড়াও গ্যাটকো এবং বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিলের আবেদন জানিয়ে আলাদা রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। এসব রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট বিভাগ। কয়েক বছর স্থগিত থাকার পর মামলাগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়ে রুল নিষ্পত্তির আবেদন জানায় দুদক। পরে গতবছর আলাদা আলাদা শুনানি শেষে মামলা তিনটি সচলের রায় দেন আদালত।
সারাবাংলা/এআই/এমও